আমার বাবা শাস্ত্রীয় সংগীত করতেন। আমাদের পরিবারের সঙ্গে সন্জীদা আপা (খাতুন) অত্যন্ত ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। আমি ছোটবেলা থেকেই টুকটাক গান করতাম। ওনাকে দেখেই আমরা বেড়ে উঠেছি। উনি আমাদের গান শুনতে চাইতেন, উৎসাহ দিতেন। আমি ও আমার বোন জান্নাত আরা ইডেন কলেজে পড়তাম। আমরা গানের প্রায় সব শাখায়ই নাম দিতাম।এর মধ্যে রবীন্দ্রসংগীতে প্রথমও হতাম। বেশ কয়েকবার ওনার হাত থেকে পুরস্কারটা নিয়েছি। উনি আমাদের বলতেন, ‘তোমরা কেন রবীন্দ্রসংগীত গাও না?’ আমরা বলতাম, আমাদের গলাটা রবীন্দ্রসংগীতের নয়। উনি আমাদের বলতেন, ‘এগুলো ভুল ধারণা। তোমরা গাও। তোমাদের কণ্ঠে মানুষ গান শুনবে।’রমনার বটমূলে উনি সাধারণত বাইরের শিল্পীদের খুব একটা ডাকতেন না। কিন্তু আমাকে মোটামুটি নিয়মিত নিয়ে যেতেন। আমাকে দিয়ে গান গাওয়াতেন। মাঝখানে অসুস্থ হয়ে বিছানাগত ছিলেন। তখনো আমি তাঁকে গান শুনিয়েছি।
উনি ভীষণ মানবিক মানুষ ছিলেন। উনি একজন কিংবদন্তি। তিনি সেই মানুষ, যিনি একটি জাতির সংস্কৃতির মুখ্য ধারার নেতৃত্ব দিতেন। এটা শুধু শূন্যতা নয়, এটা ফাটলের মতো। এমন একজন মানুষের ‘নাই’ হয়ে যাওয়া মানে আমাদের বিরাট ক্ষতি হয়ে যাওয়া। তিনি শিল্পী হিসেবে অত্যন্ত নামকরা। আবার প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে শিল্পী তৈরি করে গেছেন। তাঁর চলে যাওয়ায় যে শূন্যতা তৈরি করেছে, এটা অপরিমেয়।