গরীব মানুষের প্রোটিনের একমাত্র উৎস ডিমের দাম পাইকারিতে কমলেও খুচরায় কোনো প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। উল্টো গত দুইদিন প্রতি ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ৫ টাকা। অথচ পাইকারিতে সেই ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২৪ টাকায়। যদিও কয়েকদিন আগে ডিমের ডজন বিক্রি হয়েছে ১৩২ টাকায়।
পাইকারি ডিম ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের বাজারে বেশিরভাগ ডিমের সরবরাহ হয় টাঙ্গাইল থেকে। সরবরাহ টাঙ্গাইল থেকে হলেও বাজারের নিয়ন্ত্রণ করে ঢাকার তেঁজগাও সমিতি। তারা সারা দেশের ব্যবসায়ীদের কত টাকা দরে ডিম বিক্রি করবেন, সেটি জানিয়ে দেন। সেই মতে বাজার নিয়ন্ত্রিত হয়। বর্তমানে পাইকারিতে ১০০ পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩০ টাকা। অর্থাৎ প্রতি পিস ডিমের দাম পড়ছে ১০ টাকা ৩০ পয়সা। এদিকে খুচরা বাজারে গতকাল সেই ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ১৪৫ টাকায়। প্রতি পিসের দাম পড়ছে ১২ টাকা ৮ পয়সা। অর্থাৎ পাইকারির তুলনায় প্রতি পিস ডিম ১ টাকা ৭৮ পয়সা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ভোক্তারা বলছেন, ডিমের বাজারে এখন অরাজকতা চলছে। পাইকারি হিসেবে প্রতি ডজন ডিমের দাম পড়ছে ১২৪টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে ডজনে ২১ টাকা টাকা বেশি বিক্রি হচ্ছে। মুনাফা করারও তো একটা সীমা আছে।
জানা গেছে, মোবাইলে এসএমএস ও ফেজবুক গ্রুপ পেজের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয় দেশের ডিমের বাজার। পাইকারি ব্যবসায়ীদের সেই দাম অনুসরণ করে খুচরা ব্যবসায়ীরাও ডিমের দাম বাড়িয়ে দেন।
২নং গেট এলাকার খুচরা ডিম বিক্রেতা আরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা পাইকারি বাজার থেকে প্রয়োজন মতো অল্প অল্প ডিম এনে বিক্রি করি। আমরা পাইকারি থেকে বেশি দামে ডিম কিনেছি। এখন হয়ত দাম কমেছে।
চট্টগ্রাম ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল শুক্কুর দৈনিক আজাদীকে বলেন, পাইকারিতে কয়েকদিন ধরে ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। আসলে আমাদের এখানে ডিমের দামে অস্থিরতার পেছনে পোল্ট্রি খাতের কিছু কর্পোরেট কোম্পানি দায়ী। তারা এই চট্টগ্রামে ডিম উৎপাদন করে, নিলামের মাধ্যমে ডিম বিক্রি করছে। নিলামে যে বেশি দাম হাঁকে তার কাছে ডিম বিক্রি করছে। এটি তো সিস্টেম হতে পারে না। তবে এখন যে অবস্থা চলছে, আশা করি সামনে দাম আরো কম বাড়বে না।
ইমরান হোসেন নামের একজন ভোক্তা জানান, বাজারে প্রতিটি পণ্য নিয়ে চলছে সিন্ডিকেট। ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক পণ্য নিয়ে খেলছেন। এর সর্বশেষ সংযোজন হচ্ছে ডিম। ডিম আমাদের দেশের নিম্নবিত্তশ্রেণীর মানুষের প্রোটিনের অন্যতম প্রধান উৎস। সেই ডিমের দাম প্রতি নিয়ত বাড়ছে। গরীব মানুষ আগে যারা একটি ডিম দুইজনে ভাগ করে খেতেন, তাদের সেই ভাগটি নিঃসন্দেহে বাড়বে। তাদের পক্ষে হয়তো পরিবারের প্রতি সদস্যের জন্য একটি করে ডিম কিনে খাওয়া সম্ভব না।