চতুর্থ টেস্টে দারুণ সেঞ্চুরিতে ভারতের ম্যাচ বাঁচানোয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা ওয়াশিংটনকে নিয়মিত পাঁচ নম্বরে খেলানো উচিত বলে মনে করেন তার বাবা।

ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির পর ওয়াশিংটন সুন্দার। ছবি: রয়টার্স
ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে দারুণ সেঞ্চুরিতে ভারতের ম্যাচ বাঁচানোয় বড় অবদান রাখা ওয়াশিংটন সুন্দারের প্রতি টিম ম্যানেজমেন্টের ‘অন্যায্য’ আচরণের অভিযোগ করেছেন তার বাবা এম সুন্দার। ছেলেকে নিয়মিত একাদশে সুযোগ না দেওয়ায় নির্বাচকদের তীব্র সমালোচনা করেছেন তিনি।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টের শেষ দিন যখন ব্যাটিংয়ে নামেন ওয়াশিংটন, দিনের খেলা বাকি তখনও ৬৫ ওভার। ৬ উইকেট হাতে নিয়ে তখনও ৮৯ রানে পিছিয়ে ভারত। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবার পাঁচ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম সেঞ্চুরিতে ২০৬ বলে অপরাজিত ১০১ রানের ইনিংস খেলেন ওয়াশিংটন। পঞ্চম উইকেটে রাভিন্দ্রা জাদেজার (১০৭*) সঙ্গে ৩৩৪ বলে অবিচ্ছিন্ন ২০৩ রানের রেকর্ড জুটিতে ম্যাচ বাঁচিয়ে ফেরেন তিনি। ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেটও নেন ২৫ বছর বয়সী ক্রিকেটার।
২০২১ সালের জানুয়ারিতে টেস্ট অভিষেক হলেও এই সংস্করণে এখন পর্যন্ত ওয়াশিংটন ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন কেবল ১২টি। অভিষেকে ব্রিজবেনের গ্যাবায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩২৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ভারতের স্মরণীয় জয়ে তার ছিল উল্লেখযোগ্য অবদান। বল হাতে ম্যাচে ৪ উইকেটের পাশাপাশি দুই ইনিংসে খেলেছিলেন ৬২ ও ২২ রানের মূল্যবান দুটি ইনিংস।
ওই মৌসুমের শেষ দিকে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-১ ব্যবধানে জেতা সিরিজেও আলো ছড়ান তিনি। চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্টে সাতে নেমে খেলেন অপরাজিত ৮৫ রানের ইনিংস। আহমেদাবাদে চতুর্থ টেস্টে আটে নেমে করেন ১৭৪ বলে অপরাজিত ৯৬ রান।
এরপর লম্বা সময় ভারতের হয়ে সাদা পোশাকে খেলার সুযোগ পাননি ওয়াশিংটন। গত বছর রাঞ্জি ট্রফিতে তামিল নাড়ুর হয়ে টপ অর্ডারে নেমে সেঞ্চুরি করার পর নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের শেষ দুই টেস্টের দলে ডাক পান তিনি। ওই সিরিজ দিয়ে আবার টেস্ট খেলার সুযোগ পান সাড়ে তিন বছরের বেশি সময় পর। তারপর থেকে দলের সঙ্গেই আছেন তিনি। চলতি ইংল্যান্ড সফরে প্রথম টেস্টে যদিও তাকে খেলানো হয়নি।
ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ওয়াশিংটনের স্মরণীয় ইনিংসের পর সোমবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নির্বাচকদের সমালোচনা করে এম সুন্দার বলেন, নিয়মিত পাঁচ নম্বরে খেলানো উচিত তার ছেলেকে।
“ওয়াশিংটন ধারাবাহিকভাবে খুব ভালো করছে। কিন্তু মানুষ তার পারফরম্যান্স এড়িয়ে চলে ও ভুলে যায়। অন্য খেলোয়াড়রা নিয়মিত সুযোগ পায়, কেবল আমার ছেলেই পায় না। ওয়াশিংটনের উচিত চতুর্থ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসের মতো পাঁচ নম্বরে নিয়মিত ব্যাট করা এবং টানা পাঁচ থেকে ১০ ম্যাচে সুযোগ পাওয়া। বিস্ময়করভাবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে আমার ছেলেকে দলে নেওয়া হয়নি। নির্বাচকদের তার পারফরম্যান্স দেখা উচিত।”
“আমার ছেলে যদি মাত্র একটি বা দুটি ম্যাচে ব্যর্থ হয়, তবু তাকে বাদ দেওয়া হয়। এটা উচিত নয়। ২০২১ সালে চেন্নাইয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টার্নিং উইকেটে ওয়াশিংটন অপরাজিত ৮৫ রান করেছিল এবং একই বছর আহমেদাবাদে একই দলের বিপক্ষে করেছিল অপরাজিত ৯৬। ওই দুটি ইনিংস সেঞ্চুরিতে শেষ হলেও তাকে বাদ দেওয়া হতো। অন্য কোনো ভারতীয় ক্রিকেটারের ক্ষেত্রে কি এই ধরনের মনোভাব ধরে রাখা হয়েছে? এত কিছুর পরও সে খুব শক্তিশালী হয়ে উঠেছে এবং সেটারই ফলাফল হলো এই পারফরম্যান্স, যা মানুষ এখন দেখছে।”