রাতের যেসব অভ্যাসে ওজন কমবে

রাতে কোনো কাজে ওজন কমানোর প্রয়াস রাখার অর্থ কিন্তু এমনটা নয় যে আপনি রাতের বড় একটা অংশজুড়ে ভারী ব্যায়াম করবেন। সারা রাত না খেয়ে থেকে ওজন কমানোর চেষ্টা করাও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। ওজন কমাতে বরং সন্ধ্যার পরের সময়টা থেকে ছোট ছোট কিছু বিষয় মেনে চলা ভালো। এ সম্পর্কে জানালেন ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মতলেবুর রহমান।

রাতের খাবারে দেরি নয়

রাতের খাবার হজম হওয়ার আগেই যদি আপনি শুয়ে পড়েন, তাহলে তা থেকে পাওয়া ক্যালরির বেশির ভাগই আপনার দেহে সঞ্চিত থেকে যাবে। কারণ, ঘুমের সময় আমাদের বিপাক ক্রিয়ার হার কমে যায়। আবার সকালে উঠেও তো খাবার খেতে হবে। তাই রাতের খাবার খেয়েই শুয়ে পড়লে ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে। শোয়ার দুই-তিন ঘণ্টা আগেই খাওয়া শেষ করা ভালো। আর অবশ্যই রাতে কম ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া উত্তম।

দাঁত পরিষ্কার করুন

খাওয়ার পর দাঁত ব্রাশ করুন, ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করুন। তাহলে হঠাৎ কিছু খেতে ইচ্ছা হলেও নিজেকে দমন করা সহজ হবে। এভাবে বাড়তি ক্যালরি গ্রহণের ঝুঁকি কমবে। টকজাতীয় খাবার খেলে অবশ্য দাঁতের সুরক্ষার জন্য অন্তত এক ঘণ্টা পর দাঁত পরিষ্কার করতে হয়।

হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি

সন্ধ্যায় হাঁটতে পারেন। করতে পারেন হালকা ব্যায়াম। রাতের খাবারের পরও খানিকটা হাঁটা ভালো অভ্যাস। তবে রাতে ভারী ব্যায়াম করলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। ঘুমানোর ঘণ্টা দুয়েক আগেই ব্যায়ামের পাট চুকিয়ে নেওয়া ভালো। সারা দিন বাইরের কাজে ব্যস্ত থাকলে রাতে ঘরের কিছু কাজ করুন। ঘরের কাজেও ওজন কমে।

বিনোদনে পরিমিতি

খাওয়ার সময় টেলিভিশন দেখবেন না কিংবা কোনো ডিজিটাল ডিভাইসে ব্যস্ত থাকবেন না। তাতে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খেয়ে ফেলার ঝুঁকি থাকে। সন্ধ্যায় বা রাতে বাইরে আড্ডা দিতে গেলে চিনি মেশানো চা বা কফি এবং উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণের প্রবণতা সৃষ্টি হতে পারে। বাড়িতেও পারিবারিক আড্ডা জমে ভাজাপোড়া খাবারের সঙ্গে। আড্ডা যেখানেই হোক, বাড়তি ক্যালরির ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। আড্ডা ছাড়াও এমন বিনোদনের ব্যবস্থা রাখুন, যাতে আপনি নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারেন। ছবি আঁকা, লেখালেখি, বই পড়া কিংবা নতুন কিছু শেখার মতো কাজ করতে পারেন সন্ধ্যা বা রাতের অবসরে।

হোক প্রশান্তির আয়োজন

মানসিক চাপ কমালে ওজন কমানো সহজ হয়। সারা দিনের কাজের চাপের পর রাতে হোক প্রশান্তির চর্চা। আপনজনের সঙ্গে আয়েশি সময় কাটাতে পারেন রাতে। ছাদে বা বারান্দায় সময় কাটাতে পারেন নিভৃতে, একা অথবা প্রিয়জনের সান্নিধ্যে। বাড়িতে ধ্যান করতে পারেন। নিজ বিশ্বাস অনুযায়ী প্রার্থনা করতে পারেন। প্রশান্তিদায়ক অডিও শুনতে পারেন মৃদু শব্দে। রাত জেগে ডিজিটাল ডিভাইসে সময় কাটাবেন না। তাতে ঘুমের সময় কমে যায় অনেকটা। ওজন কমাতে রাতের ঘুম খুব গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *