ভাত খেতে না পারা কি কোনো অসুস্থতা

যে দেশের প্রধান খাদ্য ভাত, সে দেশে কেউ সারা জীবনে যদি ভাত খেতে না পারে, সেটা কিছুটা অস্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। সম্প্রতি এমন একজনের কথা আমরা পত্রিকায় দেখতে পেয়েছি। অনেকে এটা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। ভাত খেতে না পারা কি কোনো অসুস্থতা?রোগীর হয়তো ভাতের প্রতি সংবেদনশীলতা থাকতে পারে, যদিও এটি বিরল। খাদ্যে সংবেদনশীলতা থাকলে সেই খাবার খেলে বমি হতে পারে। এমনকি পেট ও অন্যান্য অঙ্গ ফুলে যাওয়া, পেটে ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্লান্তি ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। গুরুতর সংবেদনশীলতা থাকলে হাঁপানির মতো শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা বা ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। তাই গুরুতর রিঅ্যাকশন হলে অবিলম্বে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া উচিত।

কারও ভাতে অ্যালার্জি থাকলে অ্যান্টিবডি টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায়। কোনো কোনো রোগীর সাদা বা লাল ভাতে আ্যলার্জি থাকতে পারে, সেটাও টেস্টে নিশ্চিত হওয়া যায়। লাল ভাতে অ্যালার্জি থাকলে রোগীর উচিত হবে ওটস, বার্লি, রাই না খাওয়া।যাঁদের ভাতে অ্যালার্জি আছে, তাঁরা আরও এড়িয়ে চলবেন—চালের গুঁড়া, ভাতের মাড়, দুধ, রাইস কেক, রাইস নুডলস, রাইস পুডিং, সুশি ইত্যাদি।অনেক সময় কাউকে যদি ছোটবেলায় জোর করে ভাত খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয়, তাহলে রোগীর মধ্যে একধরনের ভীতি কাজ করে। মানসিক কারণে তাঁর ভাত না খাওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। তাই কারণ নির্ণয় করা জরুরি।

সমাধান কী

বিশ্বের অনেক জাতি জীবনে কখনো ভাত চোখেই দেখেনি, খাওয়া তো দূরের কথা। তাই ভাতই খেতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। যদি একান্তই ভাত খেতে না পারেন, তাহলে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই। শর্করার অন্যান্য উৎস থেকে শক্তি পাবেন। যেকোনো শস্যজাতীয় খাবার (গম, যব, ভুট্টা) খেলে ভাতের অভাব পূরণ হবে। আলু শর্করার উৎস, যা ভাতের মতোই কাজ করে। তবে যাঁদের গ্লুটেনে অ্যালার্জি থাকে, তাঁরা গমের তৈরি খাবার, যেমন আটার রুটি বা পাউরুটি খেতে পারেন না। মানসিক হলে ভাতের প্রতি সংবেদনশীলতা চিরস্থায়ী না–ও হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *