বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন (এএমডি) হলো চোখের এমন এক রোগ, যা মূলত ৫০ বছর বা তদূর্ধ্ব ব্যক্তিদের মধ্যে দেখা যায়। এটি চোখের রেটিনার কেন্দ্রীয় অংশ—ম্যাকুলাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, যার ফলে ধীরে ধীরে কেন্দ্রীয় দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হতে থাকে। ম্যাকুলা আমাদের সূক্ষ্ম ও স্পষ্ট দেখার ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন লেখাপড়া, গাড়ি চালানো বা মুখ চেনার মতো কাজ।এএমডি দুই ধরনের হতে পারে—ড্রাই (শুকনো) ও ওয়েট (ভেজা)। ড্রাই এএমডি সবচেয়ে সাধারণ এবং ধীরে ধীরে ঘটে; এতে ম্যাকুলায় ছোট ছোট হলুদ দাগ দেখা যায়। অন্যদিকে ওয়েট এএমডি তুলনামূলকভাবে দ্রুত গঠন পরিবর্তন করে। চোখের ভেতর অস্বাভাবিক রক্তনালি গঠনের মাধ্যমে রক্ত বা তরল নিঃসরণ হতে পারে, যা দৃষ্টিশক্তির ক্ষতির প্রধান কারণ।
এএমডির ঝুঁকি বৃদ্ধির কারণগুলোর মধ্যে বয়স, জেনেটিক প্রবণতা, ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা ও অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস অন্যতম। নিয়মিত চোখের পরীক্ষা, স্বাস্থ্যকর খাদ্য, রোদে গেলে সানগ্লাস ব্যবহার এবং ধূমপান বর্জনের মাধ্যমে এএমডি প্রতিরোধে কিছুটা সহায়তা পাওয়া যায়।এখন পর্যন্ত এএমডির সম্পূর্ণ নিরাময় নেই, তবে ওয়েট এএমডির ক্ষেত্রে ইনজেকশন ও লেজার থেরাপির মাধ্যমে ক্ষতি কমানো যায়। ড্রাই এমডি নিয়ন্ত্রণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সম্পূরক কার্যকর হতে পারে। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা ও সচেতনতা দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করতে সহায়ক হতে পারে।এএমডি একজন মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করতে পারে, তাই এর লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং প্রয়োজনে চোখের ডাক্তারকে দেখানো অত্যন্ত জরুরি।
লেখক: ডা. গোলাম রাব্বানী, কনসালট্যান্ট, বাংলাদেশ আই হাসপাতাল, জিগাতলা