ঈদে দীর্ঘ যাত্রার আগে-পরে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

লম্বা সময় যানবাহনে বসে থাকা ক্লান্তিকর। তাতে পেশিগুলো অবশ হয়ে আসছে বলে মনে হতে পারে। পেশির ব্যথাও হতে পারে। কেউ কেউ ভোগেন মাথাব্যথায়। কারও কারও যাত্রাপথে বমি এবং মাথা ঘোরানোর প্রবণতা থাকে। একে বলা হয় মোশন সিকনেস। যাত্রা শেষ করার কিছু সময় পরও মাথা ঘোরানোর সমস্যাটা থেকে যেতে পারে। এমন নানান সমস্যা সম্পর্কে বলছিলেন ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. সাইফ হোসেন খান।

পানি, পানীয় ও খাবার

যাত্রার সময় অনেকে পানি কম খান। যদিও এ অভ্যাস ভালো নয়। রোজা রেখে যাত্রা করলে অবশ্য পানি বা খাবার গ্রহণের সুযোগ নেই। সে ক্ষেত্রে যাত্রার আগে এবং গন্তব্যে পৌঁছে পানি, পানীয় ও খাবারের বিষয়ে যত্নশীল হোন। চা-কফি কম খান। প্রিয়জনেরা ভালোবেসে অনেক খাবারের আয়োজন করতেই পারেন। সেসব নিশ্চয়ই খাবেন; তবে সুস্থ থাকতে পরিমিতিবোধ বজায় রাখুন। হুট করে অনেক বেশি খাবার খেয়ে ফেললে শরীর খারাপ হতে পারে। তা ছাড়া মোশন সিকনেসে ভুগলে গন্তব্যে পৌঁছানোমাত্রই ভরপেট খেয়ে ফেলতে নেই। খানিকক্ষণ পর খারাপ লাগতে পারে।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায়

গন্তব্যে পৌঁছে হাত-পা এবং মুখমণ্ডলের ত্বক পরিষ্কার করে ফেলুন খুব ভালোভাবে। আপনজনদের স্পর্শ করার সময় নিশ্চয়ই আপনি নিজের হাতে থাকা অদৃশ্য ময়লা বা জীবাণু ছড়িয়ে দিতে চাইবেন না তাঁদের মধ্যে। তাই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেও পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি ভুলবেন না। যাত্রার সময়ের পোশাকও বদলে ফেলুন যত দ্রুত সম্ভব। বিশেষত বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি এবং নবজাতকদের স্পর্শ করার আগেই যাত্রাকালীন পোশাক বদলে ফেলা উচিত।

বিশ্রাম

যাত্রার পর ক্লান্তি, মাথাব্যথা এবং মাথা ঘোরানোর সেরা দাওয়াই হলো বিশ্রাম। আধা ঘণ্টা শুয়ে থাকলেই অনেকটা স্বস্তি পাবেন। যাত্রার সময় কারও কারও পা ফুলে যায়। এমন হলে পায়ের নিচে একটা বালিশ রেখে শুয়ে পড়লে আরাম পাবেন। বেড়াতে গিয়ে কোনো দিন রাতে কম ঘুমাবেন না। রাতভর আড্ডা দেবেন না। বিশ্রাম নিন সময়মতোই। নইলে ছুটি শেষে ভুগতে হবে।

শরীরচর্চা

যাত্রা শেষে খানিক বিশ্রাম নেওয়ার পর এমন কিছু হালকা ধাঁচের শরীরচর্চা করুন, যাতে পেশি টান টান হয়। এ ধরনের ব্যায়াম অর্থাৎ স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ করা হলে পেশির ব্যথা এবং অবশভাব সেরে যায়। ছুটির অন্য দিনগুলোয়ও খানিকটা সময় ব্যায়াম করবেন অবশ্যই। তা সে হালকা, মাঝারি কিংবা ভারী ব্যায়াম—যেটিই হোক। অন্তত হাঁটাহাঁটি করুন অবশ্যই। কেবল শুয়ে বসে আর খেয়েই সময় কাটিয়ে দেবেন না। জম্পেশ খাওয়াদাওয়া হলেও বেশ খানিকটা ক্যালরি খরচ হবে ব্যায়ামে। শরীর সুস্থ থাকবে।

দুর্ঘটনা এড়াতে

জলাশয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই একা নামবেন না। এমন কাউকে কাছে থাকতে বলুন, যিনি বিপদে সাহায্য করতে পারবেন। পিচ্ছিল পথে চলাচল করতে হলে সতর্ক থাকুন। কখনোই ঝোপঝাড়ে হাত দেবেন না। শিশুকে জলাশয় বা ঝোপঝাড়ের কাছে একা যেতে দেবেন না। বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করুন। মুঠোফোন চার্জে দিয়ে কথা বলবেন না কখনোই। শিশু, বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি কিংবা কোনো প্রাণীর যেন বৈদ্যুতিক সংযোগের কারণে দুর্ঘটনা না ঘটে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। বারবিকিউ পার্টি-জাতীয় কিছু আয়োজনের কথা ভাবছেন? আগুন ব্যবহার করুন সচেতনভাবে। আনন্দের ভ্রমণ হোক নির্ঝঞ্ঝাট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *