ইসলামপুরে কাবিখা–কাবিটা প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্পের কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, বরাদ্দকৃত অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার না হওয়ায় অনেক উন্নয়ন প্রকল্প কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।

২০২৪–২৫ অর্থবছরে উপজেলার চরপুটিমারী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক সংস্কারের জন্য কয়েক লক্ষাধিক টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে দক্ষিণপাড়া হাসমতের পুকুরপাড় থেকে মিষ্টারের মেশিনপাড়, দক্ষিণপাড়া মিষ্টারের বাড়ি থেকে তারির বাড়ি, আগ্রাখালী হাশেমের বাড়ি থেকে সোহেলের বাড়ি এবং শন্তুর মটরঘর থেকে সিরাজের বাড়ি পর্যন্ত চারটি প্রকল্পে মোট ১২ লাখ ৫৭ হাজার টাকা নগদ বরাদ্দ দেওয়া হয়। এছাড়া কাবিখার আওতায় টাবুরচর ফজল মাস্টারের পুকুরপাড় থেকে সাইফউদ্দিনের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা এবং টাবুরচর বেলালের দোকান থেকে দশআনী নদীর পাড় পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের জন্য ১০.২৪০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেওয়া হয়।

তবে মাঠপর্যায়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ স্থানে কাজের অগ্রগতি নেই বললেই চলে। কোথাও বা কাজ শুরু করে অল্প সময়ের মধ্যে বন্ধ রেখে কাগজে ‘সম্পন্ন’ দেখানো হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) দপ্তরের তদারকির অভাব ও দায়সারা মনোভাবের কারণেই এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যরাও নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে অজ্ঞ থাকায় সরকারি অর্থের অপচয় ঘটছে বলে তারা মনে করেন।

কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, “সরকার প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা খরচ করছে উন্নয়নের নামে, কিন্তু মাঠে তার কোনো বাস্তব ফলাফল নেই।” তারা দ্রুত তদন্ত ও রাস্তা নির্মাণ সম্পন্ন করার দাবি জানান।

প্রকল্পের সভাপতি আসাদুল্লাহ আশা জানান, “আমাকে নামমাত্র সভাপতি করা হলেও আমার স্বাক্ষর ছাড়াই চেকের টাকা উত্তোলন করে প্রকল্পের কাজ করেছেন চেয়ারম্যান।”

এ বিষয়ে চরপুটিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুজ্জামান (সুরুজ মাস্টার) বলেন, “আপনারা প্রকল্পের সভাপতির সঙ্গে কথা বলুন। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।”

এ সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শওকত জামিলের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বর্তমান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নুরে এ শেফা জানান, “সেই সময় আমি এখানে ছিলাম না, তাই বিষয়টি সম্পর্কে কিছু বলতে পারছি না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *