ফরিদপুর জেলা বিএনপি, মহানগর বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১১:৩০টার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের লিয়াকত হোসেন মিলনায়তনে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার দোসর ও ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি একে আজাদ কর্তৃক ফরিদপুরের গণমানুষের নেত্রী, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বক্তব্য ও অভিযোগের প্রতিবাদে উক্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব একে কিবরিয়া স্বপনের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নায়াব ইউসুফ।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গত ১৯ অক্টোবর কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের পরমানন্দপুর বাজারে পূর্ব ঘোষিত ৩১ দফার প্রচারপত্র বিতরণের সময় সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা একে আজাদের সফরসঙ্গী হিসেবে উপস্থিত হন।
নিষিদ্ধ ঘোষিত যুবলীগ, ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা সেখানে উপস্থিত হয়ে আপত্তিকর ভাষা ও স্লোগান দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর চড়াও হলে স্থানীয় জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে উপস্থিত জনতা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে উৎসুক জনগণ তাদের ঘটনাস্থলে অবরুদ্ধ করার চেষ্টা করে। সে সময় সেখানে থাকা বিএনপি নেতাকর্মী ও প্রশাসনের সহায়তায় একে আজাদসহ তার সফরসঙ্গীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
তারা গাড়িতে ওঠার সময় একটি কিশোর, যে আমাদের দলের কেউ নয়, আখ বা স্থানীয় গেন্ডারী দিয়ে গাড়িতে হালকা আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নেতাকর্মীরা তাকে নিবৃত করে আক্রান্ত গাড়িটিকে স্থান ত্যাগের সুযোগ করে দেয়।
নায়াব ইউসুফ বলেন, একে আজাদ আমাকে দোষারোপ করে তার নিজস্ব টিভি চ্যানেল ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমার নামে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এটি তার নিছক একটি নির্বাচনী অপকৌশল বলে মনে করি।
তিনি আরও বলেন, এসব মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্যের মাধ্যমে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইতিপূর্বেও তিনি তার নিজস্ব গণমাধ্যম ব্যবহার করে এবং প্রশাসনের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও আমাদের দলের নেতাকর্মীদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করেছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, গত দুই দিন যাবৎ আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভয়ভীতির সৃষ্টি করছে—যেমনটা অতীতে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা বিএনপির নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করতেন।
আমাদের মনে হচ্ছে, ফরিদপুরের মাটিতে আওয়ামী দুঃশাসনের আমল নতুন রূপে শুরু হয়েছে। ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে এসেও অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, ফরিদপুরের পুলিশ প্রশাসন এই আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
তিনি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের আইজিপি এবং ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজির দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আওয়ামী লীগ ফরিদপুর জেলা শাখার সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমান উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য একে আজাদসহ ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশ, জুলফিকার হোসেন জুয়েল, আজম খান, তানভীর চৌধুরী রুবেল, অ্যাডভোকেট আলি আশরাফ নান্নু, দেলোয়ার হোসেন দিলা, জেলা বিএনপির সদস্য রশিদুল ইসলাম লিটন, এবি সিদ্দিকী মিতুল, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এ এফ এম কায়ুম জঙ্গি, সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ, সাবেক সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বেনজির আহমেদ তাবরিজ, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ান বিশ্বাস তরুণসহ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সদস্য এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, সংবাদ সম্মেলনের পর বিক্ষোভ ও ঝাড়ু মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এর পূর্বে বিভিন্ন স্থান থেকে একাধিক মিছিল ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে এসে উপস্থিত হয়।