ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শুক্রবার স্বীকার করেছেন যে তার সরকার সামাজিক মাধ্যমকে একটি ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে রাইট-উইং রাজনৈতিক সমর্থন অর্জনের জন্য। তিনি জানান, সামাজিক মাধ্যম এখন ইসরাইলের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ “অস্ত্র”, যা তাদের রাজনৈতিক অবস্থানকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করছে।
নেতানিয়াহু শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নিউ ইয়র্কে ইসরাইলের কনস্যুলেট জেনারেলে মার্কিন ইনফ্লুয়েন্সারদের সঙ্গে একটি বৈঠকে এই মন্তব্য করেন। তিনি টিকটক এবং এক্স (সাবেক টুইটার)-এর নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “যদি আমরা টিকটক এবং এক্স-এর ওপর প্রভাব প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে ইসরাইল অনেক সুবিধা পাবে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, টিকটক এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ “ক্রয়”, যার নিয়ন্ত্রণে থাকলে বৃহত্তর প্রভাব তৈরি করা সম্ভব।
নেতানিয়াহু বলেন, “আমাদের অবশ্যই এলন মাস্কের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তিনি শত্রু নয়, আমাদের বন্ধু।” ইসরাইলের সরকার টিকটক এবং এক্স-এর মাধ্যমে মার্কিন জনগণের মনোভাব নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্য রাখছে, বিশেষ করে সামাজিক মাধ্যমগুলোর মাধ্যমে রাইট-উইং রাজনৈতিক শক্তিকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে।
এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন, যা নিশ্চিত করেছিল যে টিকটকের মার্কিন কার্যক্রম একটি আমেরিকান কনসোর্টিয়ামের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এতে ওরাকল, মাইকেল ডেল, রুপার্ট মারডকসহ বিভিন্ন টেক কোম্পানি থাকবে। বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, ওরাকলের প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসনের দীর্ঘদিনের ইসরাইল সমর্থন এই প্ল্যাটফর্মগুলির ক্ষমতাকে ইসরাইলের স্বার্থে ব্যবহার হতে পারে।
নেতানিয়াহুর এই মন্তব্য এমন একটি সময়ে এসেছে, যখন গাজায় ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলায় প্রচুর ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন হারানোর মধ্যে পড়েছে ইসরাইল। অক্টোবর ২০২৩ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬৫,৬০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যার মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে নেতানিয়াহু যখন বক্তৃতা দেন, তখন বেশ কিছু দেশের প্রতিনিধি গাজার প্রতি ইসরাইলের আক্রমণের প্রতিবাদে সভাকক্ষ ত্যাগ করেন।