জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) অধিবেশনে শুক্রবার ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মঞ্চে উঠতেই শতাধিক কূটনীতিক বিক্ষোভস্বরূপ সভাকক্ষ ত্যাগ করেন। গাজায় গণহত্যা এবং মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশে ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে এই ওয়াকআউট সংঘটিত হয়।
দ্য টাইমস অব ইসরাইল ও মিডল ইস্ট আই’র প্রতিবেদনে জানানো হয়, নেতানিয়াহুর সমর্থকেরা দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে করতালি দিয়ে পরিস্থিতি সামালানোর চেষ্টা করেন। তবে প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে প্রবেশ করার পর কূটনীতিকরা দ্রুত আসন ছেড়ে বেরিয়ে যান, ফলে সভাকক্ষে বেরোনোর পথে ভিড়ের সৃষ্টি হয়। এ সময় মার্কিন প্রতিনিধি দল করতালির মাধ্যমে নেতানিয়াহুকে সমর্থন জানালেও, ব্রাজিলের প্রতিনিধিরা ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি কেফিয়াহ পরে উপস্থিত ছিলেন, যা তাদের প্রতিবাদের ইঙ্গিত ছিল।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘে পাঠানো একাধিক চিঠিতে বিশ্বনেতাদের নেতানিয়াহুর ভাষণ বর্জন করার আহ্বান জানিয়েছিল। তারা ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধাপরাধী’ অভিযোগ তোলে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে, যার অভিযোগ হলো ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর গাজায় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে তিনি দায়ী।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইলের তথাকথিত ‘গণহত্যামূলক অভিযান’ শুরুর পর থেকে দুই লাখ ৩৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত, আহত বা নিখোঁজ হয়েছেন। চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত গাজায় নিহতদের ৮০ শতাংশের বেশি ছিলেন সাধারণ নাগরিক। ফাঁস হওয়া ইসরাইলি সামরিক গোয়েন্দা তথ্যেও এটি প্রতিফলিত হয়েছে।
যুদ্ধের কারণে গাজার প্রায় সব আবাসিক এলাকা, বিদ্যালয় ও হাসপাতাল ধ্বংস হয়ে গেছে। যুদ্ধের ফলে পুরো জনগণ প্রায় একবার হলেও গৃহহীন হয়ে পড়েছে।