গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রাইভেট কার চালকদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এবং তাদের জন্য সুষ্পষ্ট নীতিমালা ও ইউনিয়ন করার অধিকার নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন। তিনি এসব কথা শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা প্রাইভেট কার চালক ইউনিয়নের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে বলেন।
সাকি বলেন, “প্রাইভেট কার চালানো একটি সুনির্দিষ্ট পেশা। তারা প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করেন, তবে তাদের কাজের জন্য কোনো সরকারি বা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নেই।” তিনি আরো বলেন, প্রাইভেট কার চালকদের কোনো নিয়োগপত্র, কর্মঘণ্টা, সাপ্তাহিক ছুটি বা বেতন কাঠামো নেই, এবং যদি তারা দুর্ঘটনার শিকার হন, তাদের পরিবারের সাহায্য করার কেউ থাকে না।
মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে সাকি বলেন, “এই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল লাখ লাখ মানুষের আত্মত্যাগে। আমাদের ১৯৭১ সালের আকাঙ্ক্ষা ছিল নাগরিকের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা, কিন্তু আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি।” তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন এবং জানান, দেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির প্রতিষ্ঠা ও শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, “দেশের পঁচানব্বই ভাগ মানুষ খেটে খাওয়া মানুষ, কিন্তু তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমাদের শ্রমজীবী মানুষ রেমিটেন্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা চালিয়ে রাখছে, অথচ তাদের মর্যাদা ও অধিকার নেই।”
নতুন শ্রম আইনের খসড়া তৈরির প্রেক্ষিতে সাকি বলেন, “শ্রম সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে, কিন্তু শ্রমজীবী মানুষের শ্রমের স্বীকৃতি না দেওয়া হলে নতুন আইনের কোনো অর্থ নেই।”
সমাবেশে ঢাকা প্রাইভেট কার চালক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহীদসহ আরও অনেক শ্রমিক নেতারা বক্তব্য রাখেন। তাসলিমা আখতার, বাচ্চু ভূইয়া এবং বিলকিস নাসিমা রহমান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন এবং শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় একযোগভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।