বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ সালেহ ওয়াই. রামাদান সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেছেন।
আজ রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) জামায়াত আমীরের বসুন্ধরার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই সাক্ষাতে রাষ্ট্রদূত প্রথমে ডা. শফিকুর রহমানের স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন এবং তার সুস্থতার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।
মতবিনিময় সভায় জামায়াত আমীর ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, ‘‘বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর মতো, ফিলিস্তিনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক চিরকাল অটুট থাকবে ইনশাআল্লাহ।’’ তিনি বলেন, অতীতে ফিলিস্তিনের মুসলমানদের ওপর নানা ধরনের জুলুম-নির্যাতন চালানো হয়েছে, যার মধ্যে ইসরাইলি বোমাবর্ষণে নারী-শিশুসহ প্রায় ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ফিলিস্তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘‘গাজার প্রায় ২,৭০০ পরিবার সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ৯০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরাইলি বোমাবর্ষণে ৩৮টি হাসপাতাল, ৮৩৩টি মসজিদ এবং ১৫০টিরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘ইসরাইল গাজার খাদ্য প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে, যার ফলে সেখানে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। হাজার হাজার ফিলিস্তিনি শিশু অনাহারে মারা যাচ্ছে।’’
জামায়াত আমীর আরও বলেন, ‘‘ইসরাইল প্রকাশ্যে গাজা দখলের ঘোষণা দিয়েছে এবং সেখানে প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করার ভয়াবহ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। জাতিসঙ্ঘ, ওআইসি এবং অন্যান্য শান্তিকামী দেশগুলোর কাছে আমার আহ্বান, এই ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা অবিলম্বে বন্ধ করতে ইসরাইলকে বাধ্য করুন।’’
তিনি বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ ফিলিস্তিনের পক্ষে রয়েছেন। আমরা ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি আমাদের সমর্থন এবং ভালোবাসা জানাই, এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।’’
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূত ইউসুফ সালেহ ওয়াই. রামাদান এই সাক্ষাৎকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সন্তোষজনক বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়ে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের আন্তরিক সমর্থন এবং সহযোগিতার জন্য আমি তাদের কৃতজ্ঞ। আমি আশা করি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।’’
এই সাক্ষাৎকালে জামায়াতে ইসলামীর অন্যান্য নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন, যেমন—নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, ঢাকা মহানগরী উত্তর আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এবং পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান।