বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কিছু রাজনৈতিক মহল অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য নতুন নতুন দাবি তুলছে। তিনি বলেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এই ধরনের দাবি বাংলাদেশের জনগণের পরিচিত নয় এবং এগুলো নির্বাচনকে ব্যাহত করার জন্য উত্থাপন করা হচ্ছে।”
আজ বুধবার, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক কাজী জাফর আহমদের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন ফখরুল। সভাটি রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ভাসানী জনশক্তি পার্টি আয়োজিত ছিল।
সংশোধন প্রক্রিয়া নিয়ে বিএনপির অবস্থান
ফখরুল আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী সংস্কারের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করছে এবং কখনো বাধা সৃষ্টি করেনি। তিনি জানান, দলগুলো কখনোই রাজপথে নেমে বড় দাবি তুলে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেনি।
তিনি বলেন, “সংস্কার বা পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষ এখনও সেভাবে পরিচিত নয়। এটি বোঝানো খুব কঠিন, কারণ ভোটের সঠিক ফলাফল জনগণ জানবে না।”
নির্বাচনের তাড়াতাড়ি প্রয়োজনীয়তা
ফখরুল নির্বাচন সম্পর্কিত আরও মন্তব্য করে বলেন, ২০১৮ সালের গণ–অভ্যুত্থানের তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের দাবি তুলেছিলেন বিএনপি। সেই সময়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হতে হলেও, তিনি মনে করেন, তাড়াতাড়ি নির্বাচন হলে দেশের অর্থনীতির এই ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা যেত না। একটি নির্বাচিত সরকার দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পারত।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা
ফখরুল বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার অনেক চেষ্টা চলছে, কিন্তু একাত্তরের কথা ভোলা সম্ভব নয়।”
সরকারের ভেতরের চক্রান্ত
বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেন, “সরকারের ভেতরের একটি মহল গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তিকে ক্ষমতায় আসতে না দেওয়ার জন্য সচেতনভাবে কাজ করছে।”
আন্তর্জাতিক চক্রান্তের অভিযোগ
তিনি আরও দাবি করেন, এস আলম গ্রুপ ভারত থেকে বাংলাদেশে নির্বাচন বানচাল করার জন্য অর্থ পাচার করছে এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে আড়াই হাজার কোটি টাকা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
নির্বাচনের দাবি
ফখরুল সরকারকে দ্রুত নির্বাচন প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান এবং বলেন, “জুলাই সনদ প্রণয়ন দ্রুত শেষ করতে হবে এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে।”
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম, সঞ্চালনা করেন দলটির মহাসচিব আবু ইউসুফ। সভায় আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নাজমুল হক নান্নু।