
ক্ষমতার দ্বিতীয় মেয়াদে ২১২ দিন পার করলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তবে জনমত তার বিপক্ষে দ্রুত বদলে যাচ্ছে। সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, ট্রাম্পের নিট অনুমোদন হার (সমর্থন ও বিরোধিতার মধ্যে পার্থক্য) মাইনাস ১৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মাত্র ৪০ শতাংশ মার্কিনী তার কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট, ৫৫ শতাংশ অসন্তুষ্ট, এবং ৪ শতাংশ অস্বীকৃত অবস্থায় রয়েছেন। গত সপ্তাহের তুলনায় এই হার আরও এক পয়েন্ট কমেছে।
পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে ক্রমবর্ধমান অসন্তুষ্টি
ট্রাম্প দাবি করেছেন, মাত্র ছয় মাসে ছয়টি যুদ্ধ শেষ করেছেন এবং তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দেন। তবে সাধারণ আমেরিকানরা তার কূটনৈতিক সাফল্য নিয়ে আশাবাদী নন। ফেব্রুয়ারিতে তার পররাষ্ট্রনীতির অনুমোদন হার ছিল +২, যা বর্তমানে কমে মাইনাস ১৪ হয়ে গেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বৈঠক ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির ওয়াশিংটন সফরের পরের জরিপে এই পরিস্থিতি ফুটে উঠেছে। মাত্র ৩২ শতাংশ মানুষ মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার আলোচনায় কিছু অগ্রগতি হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের মোকাবেলায় তার নিট অনুমোদন হার মাইনাস ১০।
অর্থনীতি ও অভিবাসন নিয়ে হতাশা
দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন— অর্থনীতি ফুলে-ফেঁপে উঠবে, মুদ্রাস্ফীতি দূর হবে, চাকরি ফিরে আসবে, এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণি সমৃদ্ধ হবে। তবে বাস্তবে আমেরিকানরা এখন হতাশ। প্রথম দিকে অর্থনীতি ও মুদ্রাস্ফীতির বিষয়ে কিছু ইতিবাচক পর্যালোচনা থাকলেও বাণিজ্যযুদ্ধ ও বাজারের প্রতিক্রিয়া তা ব্যাপকভাবে নেতিবাচক করেছে। অভিবাসন নীতিতেও সমর্থন কমেছে, যা তার নির্বাচনী প্রচারের মূল বিষয় ছিল।
জনমতের আঞ্চলিক পার্থক্য
ইউগভ-এর জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্র্যাট-প্রবণ রাজ্যগুলোতে ট্রাম্পের অনুমোদন সবচেয়ে কম, আর রিপাবলিকান-ঘেঁষা রাজ্যগুলোতে সবচেয়ে বেশি। তবে কিছু রিপাবলিকান রাজ্যেও এখন ট্রাম্পের প্রতি অসন্তোষ বেড়েছে, যা আসন্ন মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
কেন ট্রাম্পের সমর্থন কমছে?
শ্বেতাঙ্গ ও পুরুষ ভোটাররা এখনও ট্রাম্পকে তুলনামূলকভাবে বেশি সমর্থন করছেন, তবে তরুণ, জাতিগত সংখ্যালঘু এবং উচ্চশিক্ষিত জনগণ তার সবচেয়ে বড় বিরোধী। আশ্চর্যের বিষয়, প্রথাগতভাবে রিপাবলিকানদের সমর্থক প্রবীণ ভোটারদের মধ্যেও অনেকেই ট্রাম্পের প্রতি অনাগ্রহী।