গাজায় প্রতিদিন হাজার ট্রাক ত্রাণ সরবরাহের প্রয়োজন, কিন্তু বর্তমানে মাত্র ১০০ ট্রাকই পৌঁছছে

ইসরায়েলের অবরোধের কারণে গাজায় কঠিন মানবিক সংকট চলছে। উপত্যকায় প্রতিদিন অন্তত ১ হাজার ট্রাক ত্রাণের প্রয়োজন হলেও মাত্র ১০০টির বেশি ট্রাক প্রবেশ পাচ্ছে না, যা প্রয়োজনের মাত্র ১০ শতাংশ। ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানিয়েছেন, অধিকাংশ ত্রাণ ব্যবসায়ীদের কাছে যাচ্ছে, ফলে সাধারণ মানুষের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না।

গত ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় নতুন অবরোধ আরোপ করেছে। মে মাসের শেষের দিকে সীমিত পরিমাণ ত্রাণ ঢুকতে শুরু করলেও পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটাপন্ন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল পরিচালিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন কিছু সাহায্য পৌঁছে দিলেও সংস্থাটির কার্যক্রম নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মুনির আল-বুরশ জানান, হাজার হাজার শিশু ও নারী অনাহারে রয়েছে। বিশেষ করে এক বছরের কম বয়সী ৪০ হাজার শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় আড়াই লাখ শিশুর জীবন সংকটাপন্ন। ১৮ বছরের নিচের ১২ লাখ শিশু খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, চলমান সংঘাত শুরু থেকে গাজায় অনাহারে ২৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ত্রাণ সংগ্রহের সময়ও ফিলিস্তিনিরা হামলার শিকার হচ্ছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানায়, ২৭ মে থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ত্রাণ নিতে যাওয়া ১ হাজার ৭৬০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬১ হাজার ৮২৭ জন, আহত ১ লাখ ৫৫ হাজার ২৭৫।

ত্রাণ সরবরাহকারী আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ প্রবেশে কোনো বাধা নেই দাবি করলেও ২ মার্চ থেকে অধিকাংশ এনজিও ত্রাণ ঢুকাতে পারেনি। ফ্রান্সভিত্তিক ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের কর্মকর্তা নাতাশা দাভিয়েস বলেন, “ত্রাণ গাজায় আটকা পড়ে আছে, খুব সামান্যই প্রবেশ করতে পারছে, যা এক ফোঁটা পানির মতো।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *