শিক্ষকদের সচিবালয়ের দিকে যাত্রা বন্ধ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীের ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ

বুধবার (১৩ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাব, কদম ফোয়ারা মোড়, শিক্ষা ভবন মোড় এবং সচিবালয়ের সামনের আব্দুল গনি রোডে গিয়ে দেখা গেছে, সারা দেশ থেকে আগত শিক্ষকেরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করছেন। তাদের কাছেই কদম ফোয়ারা মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেড এবং পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

এছাড়া, শিক্ষা ভবন মোড়েও ব্যারিকেডসহ শতাধিক পুলিশ সদস্য অবস্থান করছেন। শিক্ষা ভবন থেকে সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার পথে জলকামান এবং আর্মড পিসি কার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সচিবালয় লিংক রোডের দুই পাশে পুলিশের ব্যারিকেড এবং সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। এই পথ দিয়ে সাধারণ মানুষকে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না এবং সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনা হচ্ছে।

পুলিশের একজন সদস্য ঢাকা পোস্টকে বলেন, “সচিবালয় একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা, তাই এখানে মিছিল বা বড় ধরনের জমায়েত করা সম্ভব নয়। কেউ মিছিল নিয়ে আসলে তাদের আটকে দেওয়া হবে।”

‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’ জানায়, ২০১৮ সালে সরকারের সঙ্গে দীর্ঘ আন্দোলনের পর ৫% বার্ষিক প্রবৃদ্ধি এবং ২০% বৈশাখী ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তবে জাতীয়করণের প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি, যার কারণে শিক্ষকদের আন্দোলন এখনো অব্যাহত রয়েছে।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও শিক্ষকদের বৈষম্য দূর করার আশ্বাস দিয়েছিল। এ বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া অবস্থান কর্মসূচির ২২তম দিনে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে উৎসব ভাতা ২৫% বৃদ্ধি এবং বাজেটে বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও শ্রান্তি বিনোদন ভাতার ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে বাজেটে বরাদ্দ থাকলেও প্রজ্ঞাপন এখনও জারি হয়নি, তাই ১০ আগস্টের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারির দাবি জানিয়ে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল।

এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী ঢাকা পোস্টকে বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছি, কিন্তু এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। বর্তমান সরকারও আমাদের আশ্বাস দিয়েছে, তবে এর কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার মূল চালিকা শক্তি হলেও বছরের পর বছর বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।”

তিনি আরও জানান, “জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে একযোগে দাবি তুলতে এবং প্রয়োজনে সচিবালয় পর্যন্ত পদযাত্রা করতে প্রস্তুত আছি। এটি শুধু একটি কর্মসূচি নয়, এটি ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রাম। আমরা চাই সরকার অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয়করণের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করুক। যদি আমাদের দাবি পূরণ না হয়, তবে আমরা আরও বৃহত্তর ও কঠোর কর্মসূচি নিতে বাধ্য হব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *