ভারতের কলকাতায় গ্রেপ্তার হয়েছেন বাংলাদেশি মডেল ও অভিনেত্রী শান্তা পাল। তার কাছ থেকে ভারতীয় ভোটার কার্ড ও আধার কার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ। ২৮ জুলাই কলকাতার বিক্রমগড়ের একটি ফ্ল্যাট থেকে পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার জানান, শান্তা পালের বিরুদ্ধে কীভাবে তিনি ভারতীয় নাগরিকত্বের পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেছেন—তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের অংশ হিসেবে যাচাই করা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট নথিগুলোর বৈধতা ও উৎস।
আড়ালে চলছিল অবস্থান, একাধিক ঠিকানা ব্যবহার
পুলিশ জানায়, শান্তা ২০২৩ সাল থেকে কলকাতার যাদবপুরের বিজয়গড়ে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন। তিনি নিজেকে অ্যাপ-ক্যাব ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বলে পরিচয় দিতেন। তবে বিভিন্ন সময়ে তিনি বিভিন্ন ঠিকানা ব্যবহার করতেন।
সম্প্রতি তিনি ঠাকুরপুকুর থানায় প্রতারণার একটি অভিযোগ দায়ের করেন, যেখানে আবারও একটি ভিন্ন ঠিকানা ব্যবহার করেন। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে পুলিশ তার অতীত খতিয়ে দেখে। এরপর তদন্তে উঠে আসে, শান্তার কাছে রয়েছে একাধিক বাংলাদেশি পাসপোর্ট, মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রবেশপত্র, এবং একটি বিমান সংস্থার পরিচয়পত্র।
ভোটার ও আধার কার্ড কীভাবে পেলেন?
ভারতীয় নাগরিকত্ব না থাকলেও কীভাবে তিনি আধার ও ভোটার কার্ড সংগ্রহ করেছেন, সেটিই এখন পুলিশি তদন্তের মূল বিষয়। শান্তার বিরুদ্ধে ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে সরকারি নথি সংগ্রহের অভিযোগও উঠেছে।
পুলিশ সূত্রে জানানো হয়, এই কার্ডগুলো আসল না নকল, তা পরীক্ষা করে দেখছে ফরেনসিক বিভাগ। এ ছাড়াও কোন ধরনের কাগজপত্র দেখিয়ে তিনি সেগুলো সংগ্রহ করেছেন, তা জানতে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। খাদ্য দপ্তরের কাছে তার রেশন কার্ড সম্পর্কিত তথ্য যাচাইয়ের অনুরোধও পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশি শোবিজে সক্রিয় ছিলেন শান্তা পাল
বাংলাদেশের দুটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন মডেল হিসেবে কাজ করেছেন শান্তা পাল। তিনি একাধিক বিউটি কনটেস্টে অংশ নিয়েছেন। বড় পর্দায় তার অভিষেক ঘটে ‘ব্যাচেলর ইন ট্রিপ’ নামের সিনেমায়। এরপর তিনি অভিনয় করেন একটি তামিল ভাষার চলচ্চিত্র ‘ইয়েরালাভা’-তে, যা পরিচালনা করেন বিশ্বনাথ রাও।
বাংলাদেশের বিভিন্ন ওয়েব সিরিজ ও টেলিভিশন প্রজেক্টেও তার সম্পৃক্ততার কথা জানা গেছে।