বন্ধুদের সঙ্গে অন্যদের দ্বন্দ্বে খুন হন সামিউর: পুলিশ

একই জায়গায় মাদক সেবন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা–কাটাকাটির জেরে রাজধানীর জিগাতলায় খুন হন কলেজছাত্র সামিউর রহমান খান (আলভী)। যদিও এই কথা–কাটাকাটির সময় ছিলেন না তিনি। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে আজ বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) এ কথা জানিয়েছে।রাজধানীর জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড–সংলগ্ন একটি গলিতে ১৬ মে সামিউর ও তাঁর বন্ধুদের ছুরি ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তদের সংঘবদ্ধ একটি দল। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সামিউরকে মৃত ঘোষণা করেন।

আজ রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম। তিনি বলেন, ১৫ মে রাত ৯টার দিকে সামিউরের তিন বন্ধু আশরাফুল ইসলাম, মো. জাকারিয়া ও দৃশ্য খান ধানমন্ডি লেকপাড়ের বাগানবাড়ি এলাকায় আড্ডা দিচ্ছিলেন। একই জায়গায় তাঁদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম বয়সী আরেকটি গ্রুপও মাদক সেবন করছিল।মাসুদ আলম বলেন, আশরাফুল ও দৃশ্য খান তাদের ওই এলাকা থেকে সরে যেতে বললে হাসান নামের এক যুবকের সঙ্গে কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হাসানকে চড় দেন আশরাফুল। এ ঘটনায় আশরাফুল ও দৃশ্য খানকে ‘শিক্ষা দেওয়ার’ পরিকল্পনা করে আক্রমণ করেন হাসান।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, ১৬ মে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তিন বন্ধু আশরাফুল, মো. জাকারিয়া ও মো. ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে ধানমন্ডি লেকপাড়ের একটি রেস্টুরেন্টে আড্ডা দিচ্ছিলেন সামিউর। এ সময় হাসানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল তাঁদের ওপর হামলা চালায়। কৌশলে তাঁদের জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড–সংলগ্ন একটি গলির মধ্যে নিয়ে যায়। সেখানেই সামিউর ও তাঁর বন্ধুদের ছুরি ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে ফেলে রেখে যায় হামলাকারীরা।

মাসুদ আলম বলেন, পরে স্থানীয় লোকজন সামিউর ও তাঁর বন্ধুদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর তিন বন্ধু চিকিৎসা নিয়েছেন। সামিউর হাজারীবাগ থানার মনেশ্বর রোডে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। তিনি ধানমন্ডির একটি কলেজে স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন মো. রায়হান (২০), মো. হাবিবুর রহমান মুন্না (২৬), সমতি পাল (২৩) ও কাউসার (২১)। ধানমন্ডি ও হাজারীবাগের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *