সামাজিক মাধ্যমে স্বাস্থ্য–সচেতনতার ট্রেন্ড বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেথি দানা বা মেথি ভেজানো পানি পান করা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আয়ুর্বেদ মতে মেথিকে ‘গুণের ভান্ডার’ বলা হয়—রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ, হজমে সহায়তা, পেটের সমস্যা দূরীকরণসহ নানা উপকারে এটি ব্যবহৃত হয়। ফাইবার, আয়রন, প্রোটিন, ম্যাগনেসিয়াম ও প্রয়োজনীয় ভিটামিনে ভরপুর হওয়ায় মেথি সুস্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, সবার জন্য মেথি ভেজানো পানি উপযোগী নয়। মেথির প্রকৃতি উষ্ণ হওয়ায় এটি কিছু মানুষের ক্ষেত্রে উল্টো ক্ষতি করতে পারে।
কাদের জন্য মেথি ভেজানো পানি বিপজ্জনক?
পিত্তজনিত সমস্যা থাকলে
মেথির উষ্ণ প্রকৃতি শরীরে পিত্তের আধিক্য বাড়াতে পারে। যাদের পিত্তের সমস্যা বা অ্যাসিডিটি বেশি, তাদের মধ্যে ইনডাইজেশন, পেট জ্বালা ও অস্বস্তি আরও বেড়ে যেতে পারে।
লিভারের অসুখ থাকলে
লিভার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে মেথি ভেজানো পানি ব্লোটিং, এসিডিটি ও মেটাবলিজমে সমস্যা বাড়াতে পারে। এতে লিভারের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
গর্ভাবস্থায়
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গর্ভবতী নারীদের মেথি ভেজানো পানি পান না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। মেথির উষ্ণ প্রকৃতি অতিরিক্ত সেবনে অকাল প্রসবের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
অ্যালার্জি হলে
ত্বকে লালচে ভাব, চুলকানি বা ফোলাভাবের মতো অ্যালার্জি থাকলে মেথি ভেজানো পানি পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে।
রক্ত পাতলা করার ওষুধ সেবনকারীরা
মেথি রক্ত পাতলা করার ওষুধের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। তাই এসব ওষুধ সেবনকারীদের চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া মেথি পান থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।
শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে
শিশু ও সংবেদনশীল বয়স্কদের শরীর মেথির উষ্ণ প্রকৃতি সহ্য করতে না পেরে পেট ব্যথা, গ্যাস বা দুর্বলতা বাড়াতে পারে। ডায়াবেটিস–আক্রান্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি আরও বেশি।
সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
অতিরিক্ত মেথি ভেজানো পানি পান করলে—
পেট ফাঁপা বা ব্লোটিং
গ্যাস
বমি
ডায়রিয়া
মুখ বা ঘাম থেকে দুর্গন্ধ
এসব সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞ পরামর্শ
বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনো খাদ্য বা স্বাস্থ্য ট্রেন্ড অনুসরণ করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। সবার শরীর একইভাবে প্রতিক্রিয়া করে না, তাই শরীরের প্রকৃতি বুঝে খাদ্যাভ্যাস ঠিক করাই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়।