সাগরের বুকে ইতিমধ্যেই জন্ম নিচ্ছে নতুন এক শক্তি। মালাক্কা প্রণালীর কাছাকাছি তৈরি হওয়া একটি লঘুচাপ দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পথে এমন সতর্কতা দিচ্ছে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো। আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই এটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও দক্ষিণ আন্দামান সাগরে প্রবেশ করতে পারে। সেখানে অনুকূল পরিবেশ পেলে লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত প্রবল।
শনিবার (২২ নভেম্বর) দেশের বেসরকারি আবহাওয়া বিশ্লেষণকারী সংস্থা বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) জানিয়েছে, এই সিস্টেমটি ধীরে ধীরে ঘনীভূত হয়ে ২৫ থেকে ২৭ নভেম্বরের মধ্যে গভীর নিম্নচাপ এবং পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে এর সম্ভাব্য নাম হবে ‘সেনিয়ার’। এরপর ২৮-২৯ নভেম্বর নাগাদ এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে মধ্য ও পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে পৌঁছাতে পারে, যেখানে এটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়াবিদদের হিসাব বলছে, পরিবেশগত সহায়তা বজায় থাকলে ঘূর্ণিঝড়টি পথ বদলে উত্তর বা উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। সর্বশেষ বিশ্লেষণে ইঙ্গিত মিলছে—আগামী ১ থেকে ২ ডিসেম্বরের মধ্যে এই ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল থেকে শুরু করে বাংলাদেশ উপকূলের যে কোনো অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। তবে ঘূর্ণিঝড়টি সম্পূর্ণ সুগঠিত না হওয়া পর্যন্ত এর আঘাতের নির্দিষ্ট স্থান নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। আরও কয়েক দিনের পর্যবেক্ষণের পর এ বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।
বিডব্লিউওটি আরও জানিয়েছে, সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী বৃষ্টিবলয় সক্রিয় হতে পারে। ৩০ নভেম্বর বা ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে এই বৃষ্টিপাত দুই থেকে তিন দিন স্থায়ী হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি হওয়ার সম্ভাবনাও জানানো হয়েছে।
দেশজুড়ে তাই এখন বাড়ছে সতর্কতা সাগরের নতুন এই শক্তি কোথায়, কীভাবে আঘাত হানবে, তা জানার অপেক্ষায় আবহাওয়া বিভাগসহ সবাই।