বান্দরবানে বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মহাপিন্ড দান অনুষ্ঠান। বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে বান্দরবান রাজগুরু বৌদ্ধ বিহার থেকে প্রায় তিন শতাধিক বৌদ্ধ ভিক্ষুকের একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে বান্দরবান শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পিন্ড গ্রহণ করেন।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পিন্ডদান করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কেএস মং। এ পিন্ডদান অনুষ্ঠানে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের শ্রদ্ধা জানিয়ে নগদ অর্থ, চাল, ফল, মিষ্টি, মোম ও আগরবাতিসহ নানা রকম উপকরণ দান করে দেশ ও জাতির সুখ শান্তি প্রার্থনা করে।
বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে কঠিন চীবর দানের পর ভিক্ষুদের সম্মানে পিন্ড দান (রান্না করা খাবারসহ বিভিন্ন সামগ্রী) বিতরণের মাধ্যমে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। এতে পুণ্য লাভের আশায় শত শত শিশু-কিশোরী ও নারী-পুরুষ সারিবদ্ধ ভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভিক্ষুদের পিন্ডদানের পাশাপাশি নানা প্রকার মিষ্টান্ন খাবার দান করেন। পিন্ডদান উৎসব দেখতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমায় বান্দরবানে।
ধর্মীয় গুরুরা জানায়, আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে ভিক্ষুরা বর্ষাবাস পালন করে। এরপর কঠিন চীবর দানউৎসব শেষে পিন্ডদান উৎসবের আয়োজন করা হয়ে থাকে।
প্রচলিত আছে গৌতম বৌদ্ধ খালি পায়ে হেঁটে হেঁটে বিভিন্ন বৌদ্ধ পল্লীতে ছোয়াং (খাবার ) সংগ্রহ করতেন। তারই ধারাবিহিকতায় বান্দরবানের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা যুগ যুগ ধরে এই উৎসব পালন করে আসছে। এ সময় জেলার বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শত শত নারী-পুরুষেরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষেরা চরকা ঘুরিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি করে রাতের মধ্যে সেই সুতায় রঙ লাগিয়ে কাপড় বুনে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধানের জন্য তৈরি করা হয় চীবর (কাপড়)। পরের দিন সেই চিবর (কাপড়) ভিক্ষুদের মধ্যে দান করার নামই হচ্ছে কঠিন চীবর দান।