রিক-রনসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিচ্ছে দুদক

ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বিদেশে ৬১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা পাচারের অভিযোগে সিকদার গ্রুপের মালিক ও ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক পরিচালক রিক হক সিকদার ও রন হক সিকদারসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুই মামলার চার্জশিট দিচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার কমিশন চার্জশিট দুইটির অনুমোদন দিয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা শিগগিরই চার্জশিট দুটি আদালতে পেশ করবেন। দুদকের জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আক্তারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন।

দুদক জানায়, গত বছরের ৩১ মার্চ একটি দায়ের করা মামলার চার্জশিটে বলা হয়, রিক হক ন্যাশনাল ব্যাংকের ছয়টি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ২১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা পাচার করেছেন। এই চার্জশিটে রিক হকসহ সংশ্লিষ্ট ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। 

গত বছরের ৩১ মার্চ দায়ের করা অপর মামলার চার্জশিটে বলা হয়, রিক হকের সহোদর রন হক একই ব্যাংকের ৭টি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বিদেশে ৫০ কোটি টাকা পাচার করেছেন। এই চার্জশিটে রন হকসহ সংশ্লিষ্ট ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। 

জানা গেছে, আদালতের চার্জশিট দেওয়ার পর রিক হক ও রন হকসহ দুই মামলার ওই ২৪ জন আসামির বিচারকার্য শুরু হবে। তদন্ত করে মামলা দুটির চার্জশিট তৈরি করছেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. ফেরদৌস রহমান। গত বছরের ৩১ মার্চ মামলা দুটি দায়ের করেছিলেন দুদক পরিচালক বেনজীর হম্মদ। 

রিক হক সিকদারসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে তৈরি চার্জশিটে বলা হয়, এর মধ্যে ৬ জন আসামি যোগসাজশে একে অপরের সহায়তায় রিক হক সিকদারের এফসি অ্যাকাউন্টে ব্যালেন্স না থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইন্স ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রানজেকসন্স (জিএফইটি)-২০১৮, গাইডলাইন্স ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রানজেকসন্স (জিএফইটি)-২০১৮, ব্যাংকিং রেগুলেশন অ্যান্ড পলিসি ডিপার্টমেন্ট (বিআরপিডি) সার্কুলার ‘প্রুডেনসিয়াল রেগুলেশন্স ফর কনজ্যুমার ফাইন্যান্সিং’য়ের ‘রেগুলেশনস ফর ক্রেডিটকার্ডস-রেগুলেশন-১৩-এর নির্দেশনা লঙ্ঘন করে বিধিবহির্ভূতভাবে ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে লিমিটের অতিরিক্ত ২৬ লাখ ২২ হাজার ৪৯৯ মার্কিন ডলার ব্যয় করে পরবর্তীতে বাংলাদেশ হতে বিদেশে অর্থ পাচার করা হয়। 

ওই ক্রেডিট কার্ডসমূহের ঋণ পরিশোধ করে পাচারকৃত অর্থ হস্তান্তর বা স্থানান্তর, রূপান্তর ও গোপনকরণের মাধ্যমে বৈধতা দানের চেষ্টা করে আসামিরা দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২), দণ্ডবিধির ১০৯ ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। 

আসামি রন হক শিকদারসহ ৬ জন আসামির বিরুদ্ধে একইভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইন্স ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রানজেকসন্সসহ অন্যান্য বিধি-বিধান ভঙ্গ করা হয়। এতে তারা গত ২০১৭ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে লিমিটের অতিরিক্ত ৬০ লাখ ৯২ হাজার ২২৫ মার্কিন ডলার ৫০ কোটি টাকা ৭টি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পাচার করেছেন। 

চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মাহফুজুর রহমান, ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ্ সৈয়দ আবদুল বারী, সাবেক ডিএমডি এম এ ওয়াদুদ, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম বুলবুল, চৌধুরী মোশতাক আহমেদ ওরফে চৌধুরী রাসেল আহমেদ, সাবেক সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট উজ্জ্বল কুমার পাল, মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট সুবীর চন্দ্র কর, সাবেক অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শামসুল আলম, সাবেক অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শামসুল আলম, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এ এন এম আহসান হাবিব, বর্তমানের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট তারিকুল ইসলাম খান প্রমুখ।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *