জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান জাতির জনক নন। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে তিনি এই মন্তব্য করেন। নাহিদ তার পোস্টে লেখেন, “জাতির পিতা” উপাধিটি কোনো ইতিহাস নয়, বরং এটি আওয়ামী লীগের তৈরি একটি ফ্যাসিবাদী হাতিয়ার।
“বাংলাদেশের মালিক এ দেশের জনগণ” শিরোনামে দেওয়া পোস্টে নাহিদ ইসলাম বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, তবে তার শাসনামলে ঘটে যাওয়া জাতীয় ট্র্যাজেডির কথাও স্মরণ করা প্রয়োজন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভারতীয় ঔপনিবেশিক প্রভাবের অধীনে চলে গিয়েছিল, ১৯৭২ সালের গণবিরোধী সংবিধান চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং বাকশাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বৈরতন্ত্রের পথ তৈরি হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী রাজনীতির মূল ভিত্তি হলো মুজিব পূজা এবং মুক্তিযুদ্ধ পূজা, যা জনগণের ওপর নিপীড়ন ও দেশের সম্পদ লুণ্ঠনের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে।
নাহিদ ইসলাম দাবি করেন, দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে তাদের পারিবারিক সম্পত্তি মনে করে শাসন করেছে, এবং মুজিবের নাম ব্যবহার করে প্রতিটি দুর্নীতি ও দমনমূলক কর্মকাণ্ডকে ন্যায্যতা দেওয়া হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান এই জমিদার তন্ত্রকে ভেঙে দেবে এবং কোনো একক ব্যক্তি বা পরিবারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের ওপর ফ্যাসিবাদ চাপিয়ে দেওয়া আর সম্ভব হবে না।
তিনি আরও বলেন, “মুজিববাদ” একটি ফ্যাসিবাদী আদর্শ, যা জোরপূর্বক গুম, খুন, ধর্ষণ, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং দেশের সম্পদ লুটের সঙ্গে সম্পর্কিত। নাহিদ ইসলাম উল্লেখ করেন, ১৬ বছর ধরে মুজিবকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে এবং তার মূর্তির আড়ালে অপহরণ, হত্যা, লুণ্ঠন ও গণহত্যা ঘটেছে।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, মুজিববাদ একটি জীবন্ত বিপদ এবং এটি পরাজিত করতে রাজনৈতিক, আদর্শিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ প্রয়োজন। তিনি বলেন, “আমাদের সংগ্রাম একটি প্রজাতন্ত্র, একটি সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য, যেখানে কোনো দল, কোনো রাজবংশ বা নেতা জনগণের ঊর্ধ্বে থাকবে না। বাংলাদেশ কারো সম্পত্তি নয়, এটি জনগণের প্রজাতন্ত্র।”