ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রার্থী হবেন কিনা, তা নিয়ে জল্পনার অবসান হলো। তিনটি আসনে তাঁকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করল বিএনপি। চেয়ারপারসনের পাশাপাশি দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামও তালিকায় রাখা হয়েছে। প্রথমবারের মতো প্রার্থী হবেন তিনি।
আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৩৭টিতে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে বিএনপি। রাজধানীর গুলশানে দলটির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ঘোষিত তালিকায় দেখা যায়, খালেদা জিয়া নির্বাচন করবেন ফেনী-১, বগুড়া-৭ এবং দিনাজপুর-৩ আসন থেকে। তারেক রহমান বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন। ১৯৯৬ সাল থেকে এ আসনে নির্বাচন করেছেন খালেদা জিয়া।
যে ৬৩টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি, সেগুলোর একটি বড় অংশ জোটের শরিক দলগুলোকে ছেড়ে দেওয়া হবে। আর কিছু আসনে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্য থেকে বিএনপি এখনও কাউকে চূড়ান্ত করতে পারেনি। এসব আসনে পরে প্রার্থী ঘোষণা করা হবে বলে কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা জানিয়েছেন।
সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এবার নতুন মুখ রয়েছেন ৮৩ জন। তারা এর আগে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেননি। তবে এদের মধ্যে অন্তত ১০ জন নেতা রয়েছেন, যাঁর বাবা এর আগে সংসদ সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া দুইজনের স্বামী এমপি কিংবা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছিলেন।
বিএনপির প্রার্থী তালিকায় চারজন ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু রয়েছেন। এ ছাড়া ১২টি আসনে ১০ নারী প্রার্থীও রয়েছেন। তালিকায় জিয়া পরিবারের বাইরে অন্য আত্মীয় কাউকে রাখা হয়নি। কোনো নেতার পরিবার থেকেও একাধিক আসন দেওয়া হয়নি তালিকায়।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে চার মাস আগে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে জামায়াতে ইসলামী। এরপর ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, গণতন্ত্র মঞ্চ, এবি পার্টি, এলডিপি এবং সর্বশেষ লেবার পার্টি আলাদাভাবে প্রার্থী তালিকা দিয়েছে।
বিএনপির কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা সমকালকে জানান, নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার আগে-পরে তালিকায় রদবদল হতে পারে। ঘোষিত প্রার্থীর তুলনায় আরও বেশি যোগ্য প্রার্থী পাওয়া গেলে এই রদবদল আসতে পারে বলে জানা গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৬ বছর পর ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের জাতীয় সংসদ নির্বাচন পেতে যাচ্ছি। গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য দীর্ঘ ১৫ বছর সংগ্রাম এবং লড়াই করেছি। আজকে সেই গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে আরও সুগম করার জন্য এবং আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সব ইউনিট সারাদেশে কাজ শুরু করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছি। আমাদের সঙ্গে যারা যুগপৎ আন্দোলন করেছেন, যেসব আসনে তারা আগ্রহী, সেই আসনগুলোতে আমরা কোনো প্রার্থী দিইনি। আমরা আশা করছি, তারা তাদের নাম ঘোষণা করবেন। আমরা আলোচনার মাধ্যমে সেগুলো চূড়ান্ত করব।
মির্জা ফখরুল বলেন, সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা ২৩৭টি আসনের মধ্যেও কিন্তু পরিবর্তন হতে পারে। বিশেষ করে যুগপৎ আন্দোলনে আমাদের যে দলগুলো আছে, তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে আমরা পরিবর্তনগুলো আনতে পারি। অথবা যদি দলের স্থায়ী কমিটি মনে করে, পার্লামেন্ট বোর্ড মনে করে, তারা কোনো আসনে পরিবর্তন আনবেন– সেটা নিঃসন্দেহে নিয়ম মেনে পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এটাকে ধরে নিতে হবে আমাদের সবচেয়ে সঠিক প্রার্থী তালিকা। চূড়ান্ত নয়, কিন্তু সঠিক ধরে নিতে হবে। সুতরাং আমরা যে তালিকা ঘোষণা করলাম, এটা হচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা। প্রয়োজনে স্থায়ী কমিটি যে কোনো সময় পরিবর্তন করতে পারবে।
এর আগে গুলশান কার্যালয়ে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। পরে আধাঘণ্টা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক করে স্থায়ী কমিটি।
সূত্রমতে, বৈঠকে দল মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার বার্তা তৃণমূলে পৌঁছে দিতে সাংগঠনিক টিমকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জনসমর্থিত ও জনপ্রিয় দল হওয়ায় প্রতিটি নির্বাচনী আসনে বিএনপির একাধিক যোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। এটাই স্বাভাবিক। একটি রাজনৈতিক দলের জন্য এটি অবশ্যই গৌরব ও সম্মানের। ভিন্ন রাজনৈতিক দলের যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে রাজপথের সঙ্গী ছিলেন, এমন প্রার্থীকেও বিএনপি সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই বাস্তবতার কারণে হয়তো কিছু আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থীরা মনোনয়নবঞ্চিত হবেন। বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী সমর্থকদের কাছে প্রত্যাশা, দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে এ বাস্তবতা মেনে নেবেন। দলের সিদ্ধান্তকেই চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য করবেন। মনে রাখবেন, ধানের শীষ জিতলে আপনি জিতেছেন।
হেভিওয়েট প্রার্থী
ঘোষিত তালিকায় দলের মনোনয়ন পেয়েছেন দিনাজপুর-৩, বগুড়া-৭ ও ফেনী-১ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বগুড়া-৬ আসনে এবং ঠাকুরগাঁও-১ আসনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থী হয়েছেন।
স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে আছেন– কুমিল্লা-১ আসনে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ঢাকা-৮ আসনে মির্জা আব্বাস, ঢাকা-৩ আসনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নরসিংদী-২ আসনে ড. আব্দুল মঈন খান, চট্টগ্রাম-১০ আসনে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কক্সবাজার-১ আসনে সালাহউদ্দিন আহমেদ, সিরাজগঞ্জ-২ আসনে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভোলা-৩ আসনে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ এবং দিনাজপুর-৬ আসনে এজেডএম জাহিদ হোসেন।
ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে পটুয়াখালী-১ আসনে আলতাফ হোসেন চৌধুরী, নোয়াখালী-৩ আসনে বরকত উল্লাহ বুলু, নোয়াখালী-৪ আসনে মোহাম্মদ শাহজাহান, ফেনী-৩ আসনে আবদুল আউয়াল মিন্টু, মাগুরা-২ আসনে নিতাই রায় চৌধুরী, কুমিল্লা-৩ আসনে কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ, টাঙ্গাইল-৮ আসনে আহমেদ আজম খান; চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে কুমিল্লা-৬ আসনে মনিরুল হক চৌধুরী, ঢাকা-২ আসনে আমান উল্লাহ আমান, নোয়াখালী-১ আসনে মাহবুব উদ্দিন খোকন, নোয়াখালী-৪ আসনে জয়নুল আবদিন ফারুক, বরিশাল-১ আসনে জহির উদ্দিন স্বপন, বরিশাল-৫ আসনে মজিবর রহমান সরোয়ার, নেত্রকোনা-৪ আসনে লুৎফুজ্জামান বাবর, কুড়িগ্রাম-৩ আসনে তাজভীর উল ইসলাম, পাবনা-৪ আসনে হাবিবুর রহমান হাবিব, ব্রাক্ষণবাড়িয়া-৪ আসনে মুশফিকুর রহমান, মানিকগঞ্জ-৩ আসনে আফরোজা খান রিতা, মানিকগঞ্জ-২ আসনে মঈনুল ইসলাম খান, সিলেট-১ আসনে খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, সিলেট-২ আসনে তাহসিনা রুশদীর লুনা, লক্ষ্মীপুর-২ আসনে আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সিলেট-৬ আসনে এনামুল হক চৌধুরী, টাঙ্গাইল-২ আসনে আবদুস সালাম পিন্টু, ফেনী-২ আসনে জয়নাল আবেদীন ভিপি জয়নাল, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে ফজলুর রহমান, মৌলভীবাজার-৩ আসনে নাসের রহমান রয়েছেন। যুগ্ম মহাসচিবদের মধ্যে নরসিংদী-১ আসনে খায়রুল কবির খোকন এবং লক্ষ্মীপুর-২ আসনে শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী এবং ময়মনসিংহ-১ আসনে সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স রয়েছেন।
নেই প্রভাবশালী অনেক নেতার নাম
ঘোষিত তালিকায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এবং সেলিমা রহমানের নাম প্রথম দফার তালিকায় নেই। আলোচনায় থাকা দলের ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে শামসুজ্জামান দুদু ও আসাদুজ্জামান রিপন বাদ পড়েছেন প্রার্থী তালিকা থেকে। কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে আরও বাদ পড়েছেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তারা নির্বাচনে অংশ না নিলেও নির্বাচনী কার্যক্রমে সহায়তা করেন।
এ ছাড়া দলের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর নামও আসেনি। জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী এ নেতা টাঙ্গাইল-৫ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী। দলীয় সূত্র জানায়, আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে তাঁর নাম ঘোষণা করা হবে। দলের আলোচিত মুখ এবং কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার নামও আসেনি। সেখানে জোটের কোনো প্রার্থী আসতে পারে বলে জানা গেছে।
৫ আগস্ট-পরবর্তী যেসব নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, এমন নেতাদের মধ্যেও কয়েকজনকে তালিকায় রাখা হয়েছে। এ ছাড়া দলটির সিনিয়র নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানকেও রাখা হয়েছে তালিকায়। গত ২৬ আগস্ট বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের এ সদস্যের প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলীয় সব ধরনের পদ তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
তালিকায় ৮৩ নতুন মুখ
বিগত দিনের কোনো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি, এমন নতুন প্রার্থীর মধ্যে ৮৩ জন রয়েছেন। এর মধ্যে নীলফামারী-২ আসনে এএইচএম মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ রুবেল, রংপুর-১ আসনে মোকাররম হোসেন সুজন, রংপুর-৩ আসনে শামসুজ্জামান শামু, কুড়িগ্রাম-২ আসনে মোহাম্মদ সোহেল হোসেন কায়কোবাদ, গাইবান্ধা-২ আসনে আনিসুজ্জামান খান বাবু, গাইবান্ধা-৪ আসনে মোহাম্মদ ফারুক আলম সরকার, জয়পুরহাট-১ আসনে মোহাম্মদ মাসুদ রানা প্রধান, জয়পুরহাট-২ আসনে সাবেক সচিব আব্দুল বারী, নীলফামারী-৪ আসনে মোহাম্মদ আব্দুল গফুর সরকার, নওগাঁ-১ আসনে মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, নওগাঁ-৩ আসনে ফজলে হুদা বাবুল, নওগাঁ-৪ আসনে একরামুল বারী টিপু, নওগাঁ-৬ আসনে শেখ মোহাম্মদ রেজাউল ইসলাম, রাজশাহী-১ আসনে মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন, রাজশাহী-৪ আসনে ডিএমডি জিয়াউর রহমান, রাজশাহী-৫ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, নাটোর-১ আসনে ফারজানা শারমিন, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে এস এম আকবর আলী, সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে আইনুল হক, পাবনা-৩ আসনে মোহাম্মদ হাসান জাফির তুহিন, পাবনা-৫ আসনে মোহাম্মদ শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, কুষ্টিয়া-২ আসনে রাগীব রউফ চৌধুরী, ঝিনাইদাহ-৩ মোহাম্মদ মেহেদি হাসান, যশোর-২ আসনে মোহাম্মদ সাবিরা সুলতানা, খুলনা-৬ আসনে মনিরুল হাসান বাপ্পী, যশোর-৬ আসনে কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাতক্ষীরা-২ আসনে আব্দুর রউফ, সাতক্ষীরা-৪ মো. মনিরুজ্জামান, বরগুনা-১ আসনে নজরুল ইসলাম মোল্লা, ভোলা-৪ আসনে মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন, বরিশাল-৪ আসনে মোহাম্মদ রাজিব আহসান, পিরোজপুর-২ আসনে আহমেদ সোহেল মনজুর, টাঙ্গাইল-৩ আসনে এ এস এম উবায়দুল হক নাসির, টাঙ্গাইল-৪ আসনে মোহাম্মদ লুৎফর রহমান মতিন, টাঙ্গাইল-৬ আসনে রবিউল আউয়াল লাভলু, টাঙ্গাইল-৮ আসনে আহমেদ আযম খান, ময়মনসিংহ-১ আসনে সৈয়দ ইমরান সালেহ, ময়মনসিংহ-২ আসনে মোতাহের হোসেন তালুকদার, ময়মনসিংহ-৬ আসনে মো. আখতারুল আলম, ময়মনসিংহ-৮ আসনে লুতফুল্লাহেল মাজেদ, ময়মনসিংহ-৯ আসনে ইয়াসের খান চৌধুরী, কিশোরগঞ্জ-২ আসনে অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন, মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে শেখ মো. আবদুল্লাহ, ঢাকা-৪ তানভীর আহমেদ রবিন, ঢাকা-১৪ আসনে সানজিদা ইসলাম তুলি, ঢাকা-১৫ আসনে মো. শফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা-১৬ আসনে আমিনুল হক, গাজীপুর-২ আসনে এম মঞ্জুরুল করিম রনি, গাজীপুর-৩ আসনে অধ্যাপক ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দীপু, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে নজরুল ইসলাম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে মো. আজহারুল ইসলাম মান্নান, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে মো. মাসুদুজ্জামান, ফরিদপুর-৩ নায়াব ইউসূফ আহমেদ, ফরিদপুর-৪ শহীদুল ইসলাম বাবুল, গোপালগঞ্জ-১ আসনে মো. সেলিমুজ্জামান মোল্ল্যা, গোপালগঞ্জ-২ আসনে ডা. কে এম বাবর আলী, মাদারীপুর-১ আসনে কামাল জামান মোল্লা, শরীয়তপুর-১ আসনে সাইদ আহমেদ আসলাম, সুনামগঞ্জ-৩ আসনে মোহাম্মদ কয়সর আহমেদ, সুনামগঞ্জ-৫ আসনে কলিম উদ্দিন মিলন, সিলেট-২ আসনে তাহসিনা রুশদীর, সিলেট-৩ আসনে মোহাম্মদ আবদুল মালিক, সিলেট-৬ আসনে এমরান আহমেদ চৌধুরী, মৌলভীবাজার-২ আসনে সওকত হোসেন সকু, হবিগঞ্জ-২ আসনে আবু মনসুর সাখাওয়াত হাসান জীবন, হবিগঞ্জ-৪ আসনে এস এম ফয়সাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে এস এ হান্নান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ মুশফিকুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনে মো. আব্দুল মান্নান, ঢাকা-৬ আসনে ইসরাক হোসেন, সুনামগঞ্জ-১ আসনে আনিসুল হক, কুমিল্লা-৫ আসনে মো. জসিম উদ্দিন, নোয়াখালী-৫ আসনে মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, কুমিল্লা-১১ আসনে মো. কামরুল হুদা, ফেনী-৩ আসনে আব্দুল আওয়াল মিন্টু, নোয়াখালী-৬ আসনে মোহাম্মদ মাহবুরের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম-২ আসনে সরওয়ার আলমগীর, চট্টগ্রাম-৪ আসনে কাজী সালাউদ্দিন, চট্টগ্রাম-৫ আসনে মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম-৭ আসনে হুম্মম কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৮ আসনে এরশাদ উল্লাহ এবং চট্টগ্রাম-১৬ আসনে মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা।
ধর্মীয় সংখ্যালঘু
মাগুরা-২ আসনে নিতাই রায় চৌধুরী, ঢাকা-৩ আসনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, রাঙামাটিতে দীপেন দেওয়ান ও বান্দরবানে সাচিং প্রু।
সাংবাদিক-শিল্পীদের কেউ নেই
বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছেন সাংবাদিক এবং বিনোদন অঙ্গনের তারকাদের নাম সম্ভ্যাব্য তালিকায় নেই। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে তাদের নামও শোনা গিয়েছিল এতদিন ধরে। গণসংযোগও করেছেন তারা। এর আগে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকায় অভিনয় অঙ্গনের মানুষের চেয়ে সংগীতাঙ্গনের মানুষের নামই বেশি উচ্চারিত হয়েছে। যাদের নিয়ে বেশ আলোচনা ছিল, তাদের মধ্যে অন্যতম আমিরুল ইসলাম কাগজী, আনোয়ার আলদ্বীন, কাদের গণি চৌধুরী, এম এ আজিজের নাম।
অন্যদিকে কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন, মনির খান, রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা ও অভিনেতা আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জলের নামও ছিল আলোচনায়। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় উঠে এসেছে সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর, নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি, চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী হেলাল খান ও শিবা সানু বিএনপির হয়ে নির্বাচনে লড়তে পারেন। কিন্তু মনোনয়ন তালিকায় তাদের কারও নাম পাওয়া যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সেলিমা রহমান, হাফিজউদ্দিন আহমদ, এজেডএম জাহিদ হোসেনসহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।
পছন্দের নেতাকে প্রার্থী না করায় বিক্ষোভ
বিএনপির প্রার্থী ঘোষণাকে কেন্দ্র করে অন্তত ছয়টি জেলায় বিক্ষোভ, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনে শিবচর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জামান কামাল মোল্লাকে প্রার্থী করা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে সাজ্জাদ হোসেন লাভলু সিদ্দিকীর সমর্থকরা।
চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আসলাম চৌধুরীকে প্রার্থী না করায় বিক্ষোভ করেছেন তাঁর সমর্থকরা। কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক এমপি হাজি আমিন উর রশিদ ইয়াছিনকে প্রার্থী না করায় সমর্থকরা বিক্ষোভ করেছে। মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন দলের একাংশের নেতাকর্মী। মাগুরা-২ আসনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়নকে প্রার্থী না করায় নেতাকর্মীদের একাংশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি সোহরাব উদ্দিনকে প্রার্থী না করায় শহরের মজমপুর রেলগেটে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন তাঁর সমর্থকরা।