দেশে নির্বাচন এখন সবচেয়ে বড় সংকট

কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, বাংলাদেশে নির্বাচন এখন সবচেয়ে বড় সংকট। আজকের এই নির্বাচন নিয়ে আলোচনা আসলে আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার চিন্তা।
গতকাল শনিবার রাজধানীর তোপখানা রোডে সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি আয়োজিত ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও আমাদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় ফরহাদ মজহার এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্র মানে শুধু আইন নয়। জনগণের ইচ্ছা ও অভিপ্রায় নিয়ে সংবিধান ও রাষ্ট্রের গঠনতন্ত্র তৈরি হবে।

পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধরের সভাপতিত্বে ও অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দারের সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব। আরও বক্তব্য দেন লেখক ও কলামিস্ট মহীউদ্দীন আহমদ, আইনজীবী মনজিল মোরশেদ, সাংবাদিক এম এ আজিজ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, সাংবাদিক ও কবি সোহরাব হাসান, রাজনীতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) নাসির, মানবাধিকারকর্মী শামসুল হুদা, পূজা উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, গবেষক সঞ্জীব দ্রং প্রমুখ।

সভায় আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে বলা হয়, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আট দফা দাবি রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ ও গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় যুগোপযোগী সংস্কারসহ বাহাত্তরের সংবিধান হবে আগামীদিনের রাজনীতির ভিত্তি।
মূল প্রবন্ধে জয়ন্ত কুমার দেব বলেন, নির্বাচন নিয়ে সংখ্যালঘুদের অভিজ্ঞতা বেদনা, উদ্বেগ ও শঙ্কার। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল ২০০৮ সালের নির্বাচন। এ ছাড়া স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিটি নির্বাচন ও এর আগে-পরে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা আক্রান্ত হয়েছে। সব নির্বাচনী প্রচারণায় ধর্ম ব্যবহৃত হয়েছে। সম্প্রদায়গত ঘৃণা-বিদ্বেষ প্রচারণার হাতিয়ার হয়ে রক্তাক্ত অধ্যায়ের সূচনা করেছে। নির্বাচনে পরাজিত দল হামলা চালিয়েছে। বিজয়ী দলও হামলা করেছে।

বক্তারা বলেন, সামাজিক মাধ্যম, সভা, বিশেষ করে ধর্মীয় সমাবেশে বিদ্বেষ ও উস্কানিমূলক বক্তব্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সব সময় শঙ্কার মধ্যে রাখে। সম্প্রতি এগুলো প্রকট আকার ধারণ করেছে। নির্বাচন এলে তা আরও বেড়ে যায়। এতে স্বাভাবিকভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ, বিশেষ করে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে শঙ্কা ও অনীহা তৈরি করে। এ ব্যাপারে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।
জাতীয় সংসদে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি কম জানিয়ে সভায় বলা হয়, আগামী নির্বাচনে এখন পর্যন্ত যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তা হতাশাব্যঞ্জক। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের পর এই চিত্র গণতান্ত্রিক ধারা বিকাশের বিরোধী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *