বাংলাদেশি ভাই’ রিশাদকে ‘গেম চেঞ্জার’ বললেন পাকিস্তানি মালিক

বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের আশা ছিল, গত শুক্রবার পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) দশম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচ দিয়েই এই টুর্নামেন্টে রিশাদ হোসেনের অভিষেক হবে। কিন্তু রিশাদকে সেদিন একাদশে রাখেনি তাঁর দল লাহোর কালান্দার্স।

ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের কাছে লাহোর ম্যাচটাও হারে একপেশেভাবে। ফখর জামান–শাহিন আফ্রিদিদের দেওয়া ১৪০ রানের লক্ষ্য ৮ উইকেট ও ১৪ বল বাকি রেখে টপকে যায় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইসলামাবাদ।

প্রথম হারের পর ঠিকই টনক নড়েছে লাহোর টিম ম্যানেজমেন্টের। ইসলামাবাদের বিপক্ষে ব্যাটে–বলে নিষ্প্রভ ডেভিড ভিসাকে বাদ দিয়ে কাল রাতে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের বিপক্ষে খেলানো হয়েছে রিশাদকে।

পিএসএল অভিষেকেই বল হাতে ঝলক দেখিয়েছেন বাংলাদেশের রিশাদ। ৪ ওভারে ৩১ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন এই লেগ স্পিন অলরাউন্ডার। কোয়েটাকে ৭৯ রানে হারিয়ে লাহোরও পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে।

কাল কোয়েটার ইনিংসের সবচেয়ে বড় শিকারটাও রিশাদের। পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের দলটির জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন রাইলি রুশো। ৪টি করে চার ও ছক্কায় ১৮ বলে ৪৪ রান তুলে আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠার আভাস দিয়েছিলেন তিনি।

কিন্তু রিশাদের পরের বলেই বোল্ড হয়ে যান দক্ষিণ আফ্রিকার এই ব্যাটসম্যান, যা পিএসএলে রিশাদের প্রথম শিকার। রুশো আউট হওয়ার পরপরই ম্যাচের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় লাহোর। পরে রিশাদ মোহাম্মদ আমির ও আবরার আহমেদকেও আউট করেন।

অভিষেকেই রিশাদের ঝলমলে পারফরম্যান্স দেখে তাঁকে প্রশাংসায় ভাসিয়েছেন লাহোর কালান্দার্সের অন্যতম মালিক ও প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) সামিন রানা।

ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুমে ফিরে সামিন বলেন, ‘আমার বাংলাদেশি ভাইকে নিয়ে আমি কী বলতে পারি…রিশাদ, আমার মনে হয় তুমি গেম চেঞ্জার (ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছ)। তুমি যেভাবে বল করেছ, তা দলের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে এবং বুঝিয়ে দিয়েছ যে এই দলের বোলিং আক্রমণই এবারের টুর্নামেন্টে সেরা।’

এর আগে রিশাদের পারফরম্যান্স নিয়ে লাহোরের অধিনায়ক শাহিন আফ্রিদি বলেছেন, ‘আজ (কাল) আমরা পরিকল্পনাগুলো ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পেরেছি এবং সবাই ভালো করেছে। আমরা এমন এক বোলারকে নিতে চেয়েছিলাম, যে মাঝের ওভারগুলোয় উইকেট এনে দেয়। তাই আমরা রিশাদকে নিয়েছি।’ম্যাচ শেষে সতীর্থ ড্যারিল মিচেলের সঙ্গে আলাপচারিতায় জয়ের পেছনে রিশাদের অবদান তুলে ধরেছেন লাহোরের উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান স্যাম বিলিংস, ‘আমাদের দলে কয়েকজন দক্ষ বোলার আছে। আমার মনে হয় রিশাদ এসেই যেভাবে খেলেছে, তা দারুণ। সে অসাধারণ বল করেছে, বল স্পিন করাতে চেয়েছে। এই সংস্করণে কবজির স্পিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওর নেওয়া রাইলি রুশোর উইকেট ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। আমি ওর পারফরম্যান্সে খুব খুশি।’

লাহোর–কোয়েটা ম্যাচ চলার সময় টিভিতে দেখানো হয়েছে, এবারের পিএসএলে স্পিনাররা গড়ে ১.৫ ডিগ্রি বাঁক পাচ্ছেন। সেখানে রিশাদ কাল ৩.১ ডিগ্রি বাঁক পেয়েছেন, যা গড় বাঁকের দ্বিগুণের বেশি! এভাবে বল বাঁক খাওয়াতে পারলে সামনের ম্যাচগুলোতে রিশাদ প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের যে আরও বড় পরীক্ষায় ফেলবেন, তা না বললেও চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *