এশিয়া কাপে নবম শিরোপা জিতে নিয়েছে ভারত। ১৭তম আসরে রবিবার রাতে প্রবল প্রতিপক্ষ পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে এই কৃতিত্ব অর্জন করে সুর্যকুমার যাদবের দল। আগে ব্যাট করা পাকিস্তানের ১৪৬ রানের জবাব দিতে নেমে ২০ রানের মধ্যে আসরে উড়তে থাকা অভিষেক শর্মা ও শুবমান গিলসহ ৩ উইকেট হারালেও মিডল অর্ডার ব্যাটারদের বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিংয়ে ভারত ৫ উইকেটে ১৫০ রান করে ট্রফি উৎসব করে।
পাক-ভারত দ্বৈরথে গতকাল ফাইনালেও উপস্থিত ছিল ‘নো হ্যান্ডশেক’। ম্যাচের আগে ট্রফি নিয়ে পাকিস্তানের অধিনায়ক সালমান আঘার সঙ্গে ছবি তুলতে রাজি হননি ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। পাকিস্তানও টসের সময় বয়কট করে সঞ্চালক রবি শাস্ত্রীকে। বিতর্ক সঙ্গী করে ম্যাচ শুরু হলে পাকিস্তান ব্যাটারদের দাপট ছিল প্রথম ১০ ওভার। এরপর ভারত বোলাররা তাদের ১৪৬ রানেই আটকে দেয়। রান তাড়ায় অভিষেক শর্মাকে ব্যাক্তিগত ৫ রানে তুলে নিয়ে পাকিস্তানকে ম্যাচে রাখেন ফাহিম আশরাফ। অধিনায়ক সুর্যকুমার যাদব ফিরেন ১ রান করে শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে। চতুর্থ ওভারের শেষ বলে শুবমান গিল ১০ বলে ১২ রান করে ফাহিম আশরাফের দ্বিতীয় শিকারে পরিনত হলে চাপে পড়ে ভারত। ভারতের সংগ্রহ তখন ৪ ওভারে ২০ রান। ক্রিজে নেমে সাঞ্জু স্যামসন ও তিলক ভার্মা জুটি অবিচ্ছিন্ন ছিলেন ১৩তম ওভার পর্যন্ত। জুটিতে রান উঠে ৫৭ রান। এই জুটিতেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নিয়ে নেয় ভারত। স্যামসন ২১ বলে ২৪ রান করে আবরার আহমেদের বলে আউট হলেও অবিচল ছিলেন তিলক ভার্মা, তাকে সঙ্গ দেন শিভাম দুবে। শেষ ১২ বলে ভারতের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। ১৯তম ওভারের শেষ বলে ফাহিম আশরাফের তৃতীয় শিকার হয়ে ফিরেন শিভাম দুবে, ২২ বলে ৩৩ রান করে। ওভারে রান আসে ৭টি, অর্থাৎ ৬ বলে প্রয়োজন ১০ রান। হারিস রউফের প্রথম বলে ১, দ্বিতীয় বলেই ছক্কা মারেন তিলক। তাতেই নিশ্চিত হয় ভারতের শিরোপা উৎসব। রিঙ্কু সিং তার মোকাবেলা করা প্রথম বলেই চার হাঁকালে ২ বল হাতে রেখেই ৫ উইকেটে ১৫০ তুলে নেয় ভারত। তিলক ভার্মা ৫৩ বলে ৬৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। তার ইনিংসে ছিল ৩টি চার ও ৪টি ছয়ের মার। গতকালের হারে এক আসরে একই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক হার দেখলো পাকিস্তান।
এর আগে দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ১৭তম এশিয়া কাপের শেষ ম্যাচে অর্থাৎ ফাইনালে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামে পাকিস্তান। শাহিবজাদা ফারহান ও ফখর জামান উদ্বোধনী জুটিতেই মাত্র ৫৭ বলে তুলে নেয় ৮৪ রান। আসরে গ্রুপ পর্ব ও সুপার ফোরে একই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দুই ব্যর্থতার পর পাকিস্তান সমর্থকরা ২০০ কিংবা তার বেশি সংগ্রহ আশা করছিলেন। কিন্তু অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ধসে পাকিস্তান গুটিয়ে যায় ১৪৬ রানে, ১৯.১ ওভারে। দলের শেষ আট ব্যাটসম্যানের কেউই দুই অঙ্ক (০, ৮, ১, ৬, ০, ০, ৬, ১) ছুঁতে পারেননি! দলটি শেষ ৯ উইকেট হারায় মাত্র ৬২ রানে। শুরুটা হয় বরুণ চক্রবর্তীর বলে তিলক ভার্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফারহান ফিরলে। ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৮ বলে ৫৭ রান। তার ইনিংসে ছিল ৫টি চারের বিপরিতে ৩টি ছয়ের মার। সায়েম আইয়ুব এসে ১১ বলে ১৪ রান করলে দলের স্কোর যায় ১২.৫ ওভারে ১১৩। এরপরই ধস নামে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপে। নিয়মিত বিরতিতে উইকেটে হারাতে থাকে তারা। যদিও অপর ওপেনার ফখর জামান ২টি করে চার-ছয়ে ৩৫ বলে ৪৬ রান করেন। কিন্তু অন্যদের ব্যর্থতায় স্কোরকার্ডকে আরও সমৃদ্ধ করতে ব্যর্থ হয় সালমান আঘার দল। শেষ ৩৩ রান করতে পাকিস্তান হারায় ৮ উইকেট। ভারতের কুলদিপ যাদব ৩০ রানে ৪টি ও ২টি করে উইকেট লাভ করেন জাসপ্রিত বুমরাহ, বরুণ চক্রবর্তি ও অক্ষর প্যাটেল।