মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করতে অসুবিধা কোথায়, প্রশ্ন সোহেল রানার

সোহেল রানা—একজন মুক্তিযোদ্ধা, গুণী অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক—তার সর্বশেষ বক্তব্যে যে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, তা শুধু একজন ব্যক্তির নয়, বরং একটি প্রজন্মের না বলা যন্ত্রণার প্রতিধ্বনি।


🎖️ “ধিক তোমাকে, ধিক!”—একটি দীর্ঘশ্বাসের উচ্চারণ

সোহেল রানা তাঁর ফেসবুক পোস্টে মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট ও আইডি কার্ডকে ‘ধিক্কার’ জানিয়েছেন। এই ধিক্কার আসলে কোনো রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য নয়; বরং রাষ্ট্রের চেতনার দুর্বলতা ও অবহেলার বিরুদ্ধে এক নীরব প্রতিবাদ

“পৃথিবীর সব ধরনের আইডি কার্ডের তো একটা মূল্য আছে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যে আইডি কার্ড দেওয়া হয়েছে, সেটার চেয়ে মূল্যহীন কিছু নেই।”


🧭 মূল অভিযোগ ও হতাশার পয়েন্টগুলো:

বিষয়মন্তব্য
🎫 মুক্তিযোদ্ধা কার্ডের কার্যকারিতা নেইসরকারি-বেসরকারি সেবা, হাসপাতাল, যাতায়াত—কোথাও এই কার্ডে সম্মান বা কার্যকর সুবিধা মেলে না
🏥 চিকিৎসা সুবিধা“হাসপাতালে ২৫ জনের বসার জায়গা হলে ১০০ জন রোগী দাঁড়িয়ে থাকে… আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম দেড় ঘণ্টা”
🧓 সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য সুবিধার অভাবঅন্যান্য দেশে বয়সভিত্তিক সম্মান থাকে, বাংলাদেশে এখনো তেমন কিছু হয়নি
🇧🇩 রাষ্ট্র গঠনের নায়করা এখন বিমুখ“রাষ্ট্র তৈরি করল যারা, তাদের তো অন্তত ‘CIP’ বা ‘VIP’ সম্মান দেওয়া উচিত”
📣 সরকারি উদ্যোগ ব্যর্থশেখ হাসিনাকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন: মুক্তিযোদ্ধাদের যাতায়াতে কার্ডের মাধ্যমে বিনা খরচে সরকারি সেবা… কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি

🎬 সোহেল রানা: একজন ‘মুক্তিযোদ্ধা চলচ্চিত্রযোদ্ধা’

  • একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্রধারী যোদ্ধা
  • স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম চলচ্চিত্র “ওরা ১১ জন” এর প্রযোজক
  • নিজেও অভিনয়ে আসেন; মাসুদ রানা, জীবন নৌকা, লালু ভুলু—তিন শতাধিক ছবিতে অভিনয়
  • তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারআজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত (২০১৯)

🕯️ এই বক্তব্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?

এই বক্তব্য কোনো একদিনে জন্ম নেয়নি। এটি বছরের পর বছর ধরে উপেক্ষিত হয়ে আসা এক শ্রেণির মানুষ—মুক্তিযোদ্ধাদের—প্রতিক্রিয়া। বিশেষ করে আজ যখন:

  • রাষ্ট্রের উন্নয়নের সূচক বাড়ছে,
  • ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ উপাধি সরকারি নথিতে থাকলেও বাস্তব সেবায় তার প্রতিফলন অনুপস্থিত,
  • তরুণ প্রজন্ম অনেকেই জানেই না—এই কার্ডধারীরা কেউ জীবনের বিনিময়ে দেশ গড়েছেন।

🧩 প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন:

  1. আমরা কী সত্যি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দিচ্ছি, নাকি কাগজে নাম রেখে দিচ্ছি?
  2. বেঁচে থাকতে তারা যদি সঠিক সম্মান না পান, তবে তাদের আত্মত্যাগের মর্যাদা কোথায়?
  3. রাষ্ট্র কেন এখনো এই শ্রেণিকে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা ও সম্মান দিতে পারে না?

🛠️ কী করা উচিত? (প্রস্তাবনা)

খাতকরণীয়
🎫 আইডি কার্ডজাতীয়ভাবে কার্যকর করা—বেসরকারি হাসপাতালে ডিসকাউন্ট, সরকারি যাতায়াতে ছাড়, ব্যাংকিং ও হেলথ সুবিধা
🏥 হাসপাতালসরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ‘মুক্তিযোদ্ধা ডেস্ক’, বিশেষ কেবিন বা সেবা লাইনের অগ্রাধিকার
🧓 সিনিয়র সম্মানঅন্তত বয়স বা অবদানের ভিত্তিতে ‘জাতীয় বীর নাগরিক’ তালিকা ও সম্মান
📣 সচেতনতাশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মিডিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন্ত ইতিহাস প্রচার, যাতে নতুন প্রজন্ম জানে কারা তাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন

💬 শেষ কথায় সোহেল রানার বার্তা:

“আমি আলমারিতে মুক্তিযোদ্ধা কার্ড রেখে যাই… কারণ, এর কোনো দাম নেই। কিন্তু বেঁচে থাকতে শুধু একটু সম্মান চাই—ভাতার জন্য না, বেঁচে থাকার মানের জন্য।”


এই বিষয়ে আপনার কোনো লেখা বা প্রতিবেদন তৈরির পরিকল্পনা থাকলে, আমি সহায়তা করতে পারি তথ্য উপস্থাপন, ভাষা শৈলী কিংবা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট দিয়ে।

আপনি কি চান, আমি এই বক্তব্য ভিত্তিক একটি সংক্ষিপ্ত উপসম্পাদকীয় বা মতামতমূলক নিবন্ধ তৈরি করে দিই?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *