অনলাইনে শাড়ি কেনার কথা বলে ডেকে এনে লুট, গ্রেপ্তার ৪

প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে অনলাইনে শাড়ি বিক্রেতা দুই ব্যবসায়ী প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকার ৩১টি জামদানি শাড়ি খুইয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ গতকাল বুধবার রাজধানীর দক্ষিণখান থানার কসাইবাড়ীর হাজী মার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মেহেদী হাসান ওরফে শাওন (২৪), মো. আশরাফুল (২১), সাব্বির হোসেন ওরফে রিমন (২৫) ও মো. সাজ্জাদুল ইসলাম (২৫)। তাঁদের কাছ থেকে ১১টি শাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দক্ষিণখান থানা–পুলিশ জানায়, ১২ মে বিকেলে জামদানি শাড়ি বিক্রির জন্য নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে ঢাকার দক্ষিণখান মোল্লারটেক কসাইবাড়ী এলাকায় আসেন দুই ভাই—নুর মোহাম্মদ রাব্বি (২৪) ও তাঁর বড় ভাই ছহিম (৩৫)। তাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘জামদানী গ্রাম’ নামের একটি পেজের মাধ্যমে জামদানি শাড়ি বিক্রি করতেন।

রাব্বির বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপে অজ্ঞাত এক নারী ক্রেতার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়। ওই ক্রেতা তাঁর বোনের বিয়ের জন্য সাত-আটটি শাড়ি কিনতে চান বলে জানান এবং শাড়িগুলো যাচাই করে নেওয়ার কথা বলেন। এ সময় ২০-২৫টি জামদানি শাড়িসহ দক্ষিণখানের বটতলায় দেখা করতে বলেন ওই নারী। সরল বিশ্বাসে দুই ভাই ১২ মে সন্ধ্যায় মোট ৩১টি জামদানি শাড়ি নিয়ে নির্ধারিত স্থানে আসেন। সেখানে পৌঁছে ওই নারী ক্রেতাকে ফোন করলে তিনি কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলেন। প্রায় ৩০ মিনিট পর চারজন পুরুষ এসে নিজেদের ওই নারীর পরিচিত বলে পরিচয় দেন এবং একটি অন্ধকার গলির ভেতরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। এ সময় সন্দেহ হওয়ায় রাব্বি শাড়িগুলো নিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।

আবার ওই নারী ফোন করে রাব্বিকে বলেন, তিনি এখন কসাইবাড়ী এলাকার কানাডা প্লাজার সামনে আছেন এবং সেখান থেকেই শাড়িগুলো কিনে নেবেন। তাঁর কথায় আশ্বস্ত হয়ে দুই ভাই সেখানে পৌঁছালে ১০-১২ জনের একটি দল তাঁদের ওপর হামলা চালায়। এলোপাতাড়ি কিল–ঘুষি দিয়ে ও লাঠিপেটা করে ৩১টি জামদানি শাড়ির মধ্যে ১৯টি ছিনিয়ে নেয়। শাড়িগুলোর দাম প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা বলে জানান রাব্বি।

পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় রাব্বি ওই দিনই দক্ষিণখান থানায় একটি মামলা করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চার অভিযুক্তকে শনাক্ত করে তাঁদের গ্রেপ্তার করে।এই প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন ব্যবসায়ীদের নিশানা করে প্রতারণা ও ছিনতাই করে আসছিল বলে পুলিশ জানায়। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *