চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহাসিক খনিয়াদিঘি মসজিদ বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য পুরাকীর্তি ও মুসলিম ঐতিহ্যের নিদর্শন। এটি শুধু ধর্মীয় স্থাপত্য নয়, বরং ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং শৈল্পিক নিদর্শনের দিক থেকেও অত্যন্ত মূল্যবান।
🕌 খনিয়াদিঘি মসজিদ – একটি পরিচিতি
📍 অবস্থান:
- স্থান: খনিয়াডিঘি গ্রাম, শিবগঞ্জ উপজেলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা
- নিকটবর্তী স্থান: ঐতিহাসিক গৌড় নগরী, যা একসময়ে বাংলার রাজধানী ছিল
🕰️ ইতিহাস ও নির্মাণকাল:
- ধারণা করা হয়, মসজিদটি ১৫শ শতকে (প্রায় ১৪৬০–১৪৮০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে) বাংলার সুলতান নাসিরউদ্দিন মাহমুদ শাহ-এর আমলে নির্মিত হয়।
- এটি মুঘল-পূর্ব ইস্লামিক স্থাপত্যশৈলীর একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
🏛️ স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য:
- মসজিদটি এক গম্বুজবিশিষ্ট, এবং বহির্ভাগে স্থাপত্যশৈলী সুস্পষ্টভাবে সুলতানি আমলের প্রতিফলন ঘটায়।
- দেয়ালে পাথরের কারুকাজ ও অলঙ্করণ রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে অনেকগুলো এখনো অক্ষত।
- মসজিদের চার কোণে মিনার আকৃতির স্তম্ভ দেখা যায়, যা তখনকার মুসলিম স্থাপত্যে প্রচলিত ছিল।
- লাল ইট এবং পাথর দিয়ে নির্মিত এই মসজিদ এখনো স্থানীয়ভাবে পরিচিত এবং পূজ্যস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
📚 ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
- মসজিদটি প্রমাণ করে যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বিশেষ করে গৌড় এলাকা, একসময় ইসলামী সভ্যতা, জ্ঞানচর্চা ও প্রশাসনের কেন্দ্রস্থল ছিল।
- এটি গৌড় নগরীর অন্যান্য নিদর্শনের (যেমন ছোট সোনা মসজিদ, দারাসবাড়ি মসজিদ) ধারাবাহিক অংশ।
🧭 পর্যটনের দিক থেকে গুরুত্ব:
- প্রতিদিন বহু দর্শনার্থী, গবেষক, ইতিহাসবিদ এবং পর্যটক বাংলার মধ্যযুগীয় স্থাপত্য দেখতে এখানে আসেন।
- এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর দ্বারা সংরক্ষিত পুরাকীর্তি।
✅ সংক্ষেপে:
| দিক | তথ্য |
|---|---|
| অবস্থান | খনিয়াডিঘি, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ |
| নির্মাণকাল | ১৫শ শতক |
| নির্মাতা | বাংলার সুলতানদের আমলে |
| স্থাপত্য | এক গম্বুজ, ইট-পাথরের মিশ্র স্থাপনা |
| ঐতিহাসিক গুরুত্ব | গৌড় নগরীর ইসলামী ঐতিহ্যের নিদর্শন |
| বর্তমান ব্যবহার | ধর্মীয় ও পর্যটন কেন্দ্র |