লকডাউনের নামে আওয়ামী লীগের আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এবং শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে রংপুর।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বেলা ১২টায় কারমাইকেল কলেজের শহীদ মিনার থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে প্রধান ফটক থেকে বেরিয়ে লালবাগে সমাবেশ করে। এতে বক্তব্য রাখেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়করা।
শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এসময় মহানগরের আহ্বায়ক ইমরান হোসেন ও সদস্য সচিব নুর হাসান সুমন, রাজিব চৌধুরীসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জুলাই ঐক্য ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। দুপুরে নগরীর টাউনহল থেকে মিছিলটি বের হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়। এসময় বক্তব্য দেন মুখপাত্র নাহিদ হাসান খন্দকার, রেভিটা বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র জান্নাত আনজুম, জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক হামিম মোন্তাছির অহন, সংগঠক তন্মম প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, আমরা চাই শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি সেটা হলো, ফাঁসি। যে মানুষটি এতগুলো মানুষকে হত্যা করেছে তার ফাঁসি ছাড়া আর কোন শাস্তি নেই।
বক্তারা আরও বলেন, শেখ হাসিনা ভারতে বসে লকডাউন ঘোষনা করেছে। কিন্তু বাংলার জনতা দেখিয়ে দিয়েছে তাদের লকডাউন কেউয়ে মানছে না। সব কিছুয়ে স্বাভাবিক রয়েছে। যানবাহন আগের মতই চলছে। লকডাউনের এখানে “ল” ও পালন হচ্ছে না। এই সরকারে প্রধান কাজ ছিলো শেখ হাসিনাসহ যে ফ্যাসিস্ট লীগ আছে সবাইকে চিহ্নত করে তাদেরও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।কিন্তু এই সরকার ১৪-১৫ মাসেও সেটি পারে নাই। আমরা সরকারকে বলে দিতে চাই আওয়ামীলীগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রজনতা রাজপথে আছে এবং থাকবে।
গত বুধবার (১২ নভেম্বর) রাত ৯ টায় শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে রোকেয়া বিশ্ববিদ্য্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাস থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রধান ফটক হয়ে পার্কের মোড়ে যায়। সেখান থেকে মিছিলটি আবু সাঈদ চত্বর ঘুরে প্রধান ফটকে এসে সমাবেশ করে। এসময় শিক্ষার্থীরা শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই, আওয়ামীলীগের আস্তানা এই বাংলায় হবে নাসহ বিভিন্ন শ্লোগান দেয়। পরে সেখানে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমন্বয়ক সোহাগ শাহরিয়ার, আহমেদ।
এসময় বক্তারা বলেন, ২৪ এর পরে যেসব কালচারাল ও নব্য ফ্যাসিস্ট ও বুদ্ধিজীবিরা রিফাইন্ড আওয়ামীলীগকে বৈধতার উৎপাদনের চেস্টা করেছে। কয়েকদিনে আওয়ামীলীগের বাসে আগুন, ককটেল বিষ্ফোরণসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম তার প্রমাণ। এখন সময়ে এসেছে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আওয়ামীলীগ এবং সকল সহযোগি ও অঙ্গ সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। যদি সেটা না করা হয় তাহলে প্রয়োজনে আবারও জুলাই বিপ্লবে ফিরবে দেশের ছাত্র-জনতা। একই সাথে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানানো হয়।
এদিকে বুধবার (১২ নভেম্বর) রাত ১টার দিকে লকডাউনের নামে আওয়ামী লীগের আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এবং শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে নগরীতে মটরসাইকেল শোডাউন করেন জেলা যুবদল। এসময় প্রায় শতাধিক মটরসাইকেল ছিলো। এর নেতৃত্ব দেন জেলার সভাপতি নাজমুল আলম নাজু।
নগরীর এলাককা ঘুড়ে দেখা যায়, মোড়ে মোড়ে পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোষাকের গোয়েন্দার লোকজন রয়েছে। কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের অনলাইনে ডাকা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা রুখতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি যানবাহন ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি করছে পুলিশ।