মার্কিন ট্যারিফ কমানো ‘সন্তোষজনক’, তবে পুরো চুক্তির বিবরণ জানা জরুরি: আমীর খসরু

বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আরোপিত শুল্কহার ২০ শতাংশে কমানোকে রফতানি খাতের জন্য ‘সন্তোষজনক অবস্থা’ হিসেবে দেখছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

“জয়-পরাজয়ের কিছু নয়, প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানেই আছি”

আমীর খসরু বলেন,

“এটা কোনো জয়-পরাজয়ের বিষয় নয়। যেই শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে, তাতে আমরা প্রতিযোগিতামূলকভাবে একটি সন্তোষজনক অবস্থানে আছি। পাকিস্তান ১৯ শতাংশ, ভিয়েতনাম ২০ শতাংশ, ভারত ২৫ শতাংশ—আমরা ২০ শতাংশে এসেছি। সার্বিক প্রতিযোগিতার দিক থেকে এটি মোটামুটি ঠিক আছে।”

“শুধু ট্যারিফ নয়, পেছনের সমঝোতাও জানতে হবে”

শুল্ক কমানোর পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্ভাব্য সমঝোতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি নেতা। তিনি বলেন,

“ট্যারিফের বিপরীতে আর কী দিতে হয়েছে, সেটা না জেনে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব বলা সম্ভব নয়। পুরো বিষয়টি একটা প্যাকেজ। সেখানে আমেরিকানদের কী সুবিধা দেওয়া হলো, তারা কী দাবি করলো, সেটা স্পষ্ট হওয়া দরকার।”

একই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন,

“বাণিজ্য সচিব সম্প্রতি ২৫টি বোয়িং বিমান কেনার কথা বলেছেন। এটা ট্যারিফ হ্রাসের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কি না, সেটাও জানার বিষয়। যুক্তরাষ্ট্র ট্যারিফের মাধ্যমে তাদের পণ্য রফতানির সুযোগ বাড়াতেই চায়।”

শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানের উদাহরণ

শুল্ক কাঠামোর এই পরিবর্তন শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর বাণিজ্য পুনর্বিন্যাস পরিকল্পনার অংশ বলেও মন্তব্য করেন খসরু। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন,

“শ্রীলঙ্কার হার কমে ৩০ থেকে ২০ শতাংশে এসেছে, পাকিস্তানের ২৯ থেকে ১৯ শতাংশে নেমেছে। এ থেকে বোঝা যায়, যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিকভাবে কিছু বাণিজ্যিক অংশীদারের ক্ষেত্রে তাদের ট্যারিফ কাঠামো নতুন করে সাজাচ্ছে।”

“আমেরিকা নির্ভরশীলতায় ঝুঁকি আছে”

সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন,

“আমাদের অর্থনীতি শুধুই আমেরিকা-নির্ভর হতে পারে না। বাণিজ্য শুধু আমেরিকার সঙ্গেই নয়, আরও অনেক দেশের সঙ্গে হচ্ছে। সেগুলোর তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে—আমরা কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি।”

তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে আহ্বান জানান,

“চুক্তির পূর্ণ বিবরণ ও ব্যাখ্যা জনগণের সামনে খোলাসা করা উচিত। শুধু একটি হার জানিয়ে দেওয়া যথেষ্ট নয়। এর পেছনের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিষয়গুলোও স্বচ্ছভাবে তুলে ধরা দরকার।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *