পাইকারিতে কমল পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল কাঁচাবাজার

দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েই চলেছে। আর সেটির প্রভাব পড়েছে ভোগ্যপণ্যের অন্যতম বৃহৎ পাইকারি বাজারখ্যাত চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে। প্রতি কেজিতে অন্তত ১০টাকা পর্যন্ত কমেছে এর দাম। যদিও খুচরা বাজারে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। তবে স্থিতিশীল রয়েছে কাঁচাবাজার। মাছ-মাংস-সবজির দাম আগের মতোই ‘ঊর্ধ্বগতি’।

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দেশি পেঁয়াজ ৫৫ থেকে ৬০টাকায় বিক্রি হয়েছে। আগের সপ্তাহে যা ৬০টাকার ওপরে ছিল। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, দুই সপ্তাহ ধরে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। সরবরাহ বাড়ায় দামও কমেছে। 

সামনে দাম আরও কমতে পারে বলে জানিয়েছেন খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস। তিনি বলেন, ‘বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজের ব্যাপক মজুদ রয়েছে। এ কারণে দামও কমছে। সামনে দাম আরও কমতে পারে।’

বর্তমানে দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ২২ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হচ্ছে। বাকিটা আমদানি করা হয়। আগে আমদানির বেশিরভাগ পেঁয়াজই আসতো ভারত থেকে। তবে বর্তমানে বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। এদিকে পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কমলেও খুচরায় কমেনি। সেখানে আগের মতোই মানভেদে ৭০-৮০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভোক্তারা।

বহদ্দারহাটে বাজার করতে আসা গৃহবধূ হালিমা বেগম বলেন, ‘পাইকারিতে দাম একটু বাড়লেই খুচরা বাজারে সঙ্গে সঙ্গে দাম বেড়ে যায়। কিন্তু পাইকারি বাজারে কমলে সেটির প্রভাব আমরা দেখি না খুচরা বাজারে। পেঁয়াজের দাম পাইকারি আর খুচরার মধ্যে পার্থক্য ৫-৬ টাকা হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে দেখছি প্রার্থক্য ২০টাকা। প্রশাসনের খুচরা বাজারে তদারকি বাড়াতে হবে।’

স্থিতিশীল কাঁচাবাজার:

মাছ থেকে মাংস, সবজি থেকে মুরগি-স্থিতিশীল রয়েছে দাম। আগের সপ্তাহের মতো প্রায় সব সবজিই কিনতে হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০টাকা। মরিচ এখন আরও বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০০টাকার আশপাশে। পবিত্র আশুরা উপলক্ষে এক লাফে ২৫টাকা পর্যন্ত বাড়া ব্রয়লার মুরগির দাম স্থির ছিল ১৫০-১৬০টাকায়। গত সপ্তাহে পূজা উপলক্ষে আরেকদফা বাড়ে এই মুরগির দাম। এখন ১৬০-১৭০টাকায় বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগির দাম। তবে সোনালি মুরগির দাম আগের মতোই ২৮০-৩০০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১৩৫-১৪০টাকায় মিলছে প্রতি ডজন ডিমের দাম।

অন্যদিকে মাছের মধ্যে তেলাপিয়া-পাঙ্গাস ছাড়া সব মাছের দামেই ঊর্ধ্বগতি। জীবন্ত কাতলা-রুই ৪০০-৪৫০টাকা, চিংড়ি প্রকারভেদে ৭০০-১২০০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংস ১০০০ হাজার ও ছাগলের মাংস ১১০০টাকায় বিক্রি হয়েছে বাজারে।

দাম না কমায় হতাশ ভোক্তারা। কর্ণফুলী কমপ্লেক্সে বাজার করতে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা শিহাব উদ্দিন বলেন, ‘ইদানিং বাজারে আসলে কষ্ট হয়। কিছু কিনতে চাইলেই দেখি দাম বেশি। দাম বাড়তি হওয়ায় সামুদ্রিক মাছ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি বহুদিন হলো। এখন তেলাপিয়া-পাঙ্গাস মাছই আমাদের ভরসা। যা দাম, এখন তো  সবজিও বেছে বেছে খেতে হচ্ছে। কখন নিত্যপণ্যের দাম কমবেÑসেই অপেক্ষায় আছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *