আজ বুধবার দিনের শুরুর কথা। তখনো সূর্যের আলো ফোটেনি। সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ফুলজোড় নদীতে একটি হাতিকে গোসল করাতে আসেন মাহুত ওমর ফারুক।
নদীতে নেমে মনের আনন্দে গোসল করতে থাকে হাতিটি। নদীর পাড়ে বসে ছিলেন মাহুত। সময় গড়িয়ে যায়। হাতিটি আর তীরে ওঠে না। মাহুত তাড়া দেন, হাতি সরে যায়। পাড়ে আর আসে না। একপর্যায়ে তিনি তাঁর তিন সহকারীকে খবর দেন। চারজন মিলে হাতিটিকে পানি থেকে তোলার চেষ্টা করতে থাকেন, কিন্তু হাতি আর ডাঙায় ওঠে না!
খবর পেয়ে ততক্ষণে নদীর দুই পাড়ে ভিড় জমে যায়। আশপাশের নানা বয়সী শত শত উৎসুক মানুষ সেখানে আসেন। হাতির আনন্দ, মাহুত ও তাঁর সহকারীদের চেষ্টা—সবই পাড়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন তাঁরা।
এ সময় স্থানীয় একজন ডিঙিনৌকা নিয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন। মাহুতের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনিও নৌকা নিয়ে হাতি পাড়ে তোলার কাজে যোগ দেন। প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর সকাল আটটার দিকে নদী থেকে হাতিটিকে পাড়ে আনা সম্ভব হয়।
আবদু রউফ নামের স্থানীয় একজন বলেন, হয়তো হাতিটি অনেক দিন পর এমনভাবে নদীতে গোসল করার সুযোগ পেয়েছে। তাই পানি থেকে সহজে উঠতে চায়নি।
হাতির জলকেলি দেখে আনন্দিত বলে জানালেন আরেক স্থানীয় বাসিন্দা আল আমিন সরকার।
স্থানীয় একটি শিশু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক সাবিহা লুৎফা বলেন, ‘সকালবেলায় হাতির এমন জলকেলি দেখতে ভালোই লাগলো।’ তবে হাতিটি পানি থেকে তোলার সময় মাহুতের মারপিটের বিষয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
মাহুত ওমর ফারুক বলেন, জেলার উল্লাপাড়া থেকে দুই দিন আগে তাঁরা এই এলাকায় এসেছেন। হাতিকে গোসল করাতে গিয়ে এমন পরিস্থিতিতে আগে কখনো পড়েননি।
উপজেলার পরিবেশ ও প্রকৃতিবিষয়ক সংগঠন ‘স্বাধীন জীবন’-এর নির্বাহী পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, হাতি লালন-পালন করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে অনুমোদন লাগে। তবে এভাবে বন্য প্রাণীকে শৃঙ্খলিত না করাই ভালো।