নতুন রূপে সাজছে করোনারি কেয়ার ইউনিট

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে করোনারি কেয়ার ইউনিটের (সিসিইউ) সক্ষমতা বাড়ছে। নতুন করে যুক্ত হচ্ছে আরো পাঁচটি বেড। এছাড়া একই সাথে আসছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও। এতে অর্থায়ন করছে শাহেনশাহ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্ট। চিকিৎসকরা বলছেন, সামনে শীত মৌসুম আসছে। শীত মৌসুমে হৃদরোগী বাড়ে। শীতের সাথে হৃদরোগ বাড়ার বিজ্ঞান সম্মত কোনো কারণ না থাকলেও রোগী বাড়ার কারণে চিকিৎসকদের ওপরও বাড়তি চাপ পড়ে। কারণ এ সময় হাসপাতালে অনুমোদিত বেডের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি রোগী ভর্তি থাকে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোগী বাড়ার কারণে চিকিৎসা দিতেও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বিশেষ করে অনেক রোগীর জরুরি ভিত্তিতে এনজিওগ্রাম কিংবা রিং লাগানোর প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু হৃদরোগ বিভাগের দুটি এনজিওগ্রাম মেশিনের একটি ৪ বছরের বেশি সময় ধরে নষ্ট থাকায় জরুরি সেবা পাচ্ছে না অনেক রোগী। একটি যেটি সচল আছে, সেটিতেও মাঝে মাঝেও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে বিত্তবানরা বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল–ক্লিনিকে চিকিৎসা নিলেও বিপাকে পড়ছেন দরিদ্র রোগীরা। মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও অনেক রোগী এনজিওগ্রাম কিংবা রিং লাগাতে পারছেন না। এতে অনেক রোগী মারাও যাচ্ছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৯৯৮ সালে চমেক হাসপাতালে মাত্র ৬টি বেড নিয়ে হৃদরোগ বিভাগটি চালু হয়। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে সেটি ১৬০ বেডে উন্নীত করা হয়। তবে যেহেতু চট্টগ্রাম অঞ্চলে হৃদরোগীর প্রকোপ বেশি তাই এই সংখ্যাটি যে একেবারে অপ্রতুল তা প্রমাণিত হতে সময় লাগেনি। বর্তমানেও বেডের অতিরিক্ত রোগী ভর্তি রয়েছে। ফলে সেবার মানের দিক থেকেও প্রায় সময় ধীরগতির অভিযোগ ওঠে। অন্যদিকে প্রায় সব বিভাগে অধ্যাপক পদ থাকলেও হৃদরোগ বিভাগে নেই কোনো অধ্যাপক পদ। বর্তমানে বিভাগে তিনজন সহযোগী অধ্যাপক, ৯ জন সহকারী অধ্যাপক, ৭ জন কনসালটেন্ট, একজন সিনিয়র কনসালটেন্ট, একজন রেজিস্ট্রার ও ৪ জন সহকারী রেজিস্ট্রার কর্মরত রয়েছেন। তবে হাসপাতালে অনুমোদিত পদ আছে একজন সহযোগী অধ্যাপক ও দুইজন সহকারী অধ্যাপকের। বাকিরা সবাই সংযুুক্তিতে কাজ করছেন।

জানতে চাইলে চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. নুর উদ্দিন তারেক দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমাদের হৃদরোগ বিভাগের সব সময় অনুমোদিত শয্যার অতিরিক্ত রোগী ভর্তি থাকে। আগে তো বেড আরো কম ছিল। ধীরে ধীরে সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। যেমন এখন সিসিইউ’তে বেড যুক্ত হচ্ছে।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন দৈনিক আজাদীকে বলেন, হৃদরোগ বিভাগের সিসিইউতে আগের ২০ বেডের সাথে নতুন করে এখন আরো ৫টি বেড যুক্ত হচ্ছে। এছাড়া নতুন যন্ত্রপাতিও যুক্ত হচ্ছে। একই সাথে পুরো সিসিইউ ইউনিট নতুন আঙ্গিকে সাজানো হচ্ছে। এসব কাজে অর্থায়ন করছে শাহেনশাহ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্ট। তারা ২ কোটি টাকা মতো অর্থায়ন করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *