জানা গেল কবে থেকে জুবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে বর্ষা-মাহির

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হোসাইনের হত্যাকাণ্ডটি ছিল পরিকল্পিত। প্রায় এক মাস আগে থেকেই এ হত্যার পরিকল্পনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী বর্ষা ও তার প্রেমিক মাহির রহমান।

বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, ২৫ সেপ্টেম্বর থেকেই বর্ষা ও মাহির হত্যার পরিকল্পনা শুরু করে। হত্যার দিন মাহিরের সঙ্গে তার আরও দুই বন্ধু ছিল। তারা নতুন দুটি সুইচ গিয়ার কিনে আনেন, যা হত্যায় ব্যবহৃত হয়। ঘটনার সময় মাহির ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে, আর বর্ষা তাকে হত্যার নির্দেশ দেয়।

ওসি আরও বলেন, “এটা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত হত্যা। বর্ষা ও মাহিরের মধ্যে নয় বছরের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এক পর্যায়ে বর্ষা জুবায়েদের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং মাহিরকে সম্পর্ক শেষ করতে বলে। পরে আবার বর্ষা জানায়, সে জুবায়েদকে আর পছন্দ করে না। তখন থেকেই তারা মিলে জুবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে।”

প্রাথমিকভাবে বর্ষা অপরাধের কথা অস্বীকার করলেও মাহিরের মুখোমুখি করলে পুরো সত্য প্রকাশ পায়। পুলিশের হাতে এখন পর্যন্ত বর্ষাসহ চারজন আটক রয়েছে, এবং মামলার প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে বলে জানিয়েছেন ওসি রফিকুল ইসলাম।

জুবায়েদ হোসাইন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন।

গত এক বছর ধরে তিনি পুরান ঢাকার আরমানিটোলার নূরবক্স লেনের রৌশান ভিলা ভবনে বর্ষাকে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন। বর্ষার বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন।

গত রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বর্ষার বাসার তিন তলায় ওঠার সময় সিঁড়িতেই খুন হন জুবায়েদ। সিঁড়ি জুড়ে রক্তের দাগ পাওয়া যায় এবং তৃতীয় তলার সিঁড়িতে তার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বংশাল থানার সামনে বিক্ষোভ ও আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানায়। তাঁতিবাজার মোড়ও অবরোধ করা হয়। ওই রাতেই পুলিশ বর্ষাকে হেফাজতে নেয় এবং সোমবার (২০ অক্টোবর) জুবায়েদকে তার গ্রামের বাড়িতে দাফন সম্পন্ন হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *