গোপালগঞ্জে নেমেছিল মুক্তিকামী জনতার ঢল

দীর্ঘ প্রায় ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়েছিল গোপালগঞ্জ। এদিন সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে দলে দলে নানা এলাকা দিয়ে শহরে প্রবেশ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। তাদের হাতে ছিল উদ্যত রাইফেল ও বাংলাদেশের সোনালি মানচিত্র খচিত লাল-সবুজ পতাকা। উল্লাসভরে তাদের স্বাগত জানান গোপালগঞ্জবাসী। 

১৯৭১ সালের ওই দিনের প্রত্যক্ষদর্শী গোপালগঞ্জের প্রবীণ গণমাধ্যমকর্মী ও কবি রবীন্দ্রনাথ অধিকারী (৭১)। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জ শহরে সেদিন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী মানুষের ঢল নামে। তারা স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে শহরের প্রতিটি সড়কে আনন্দ মিছিল বের করেন। এদিন তারা মুক্তির আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠেন। শত কষ্টে অর্জিত বিজয় তারা উদযাপন করেন।

দীর্ঘ প্রায় ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়েছিল গোপালগঞ্জ। এদিন সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে দলে দলে নানা এলাকা দিয়ে শহরে প্রবেশ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। তাদের হাতে ছিল উদ্যত রাইফেল ও বাংলাদেশের সোনালি মানচিত্র খচিত লাল-সবুজ পতাকা। উল্লাসভরে তাদের স্বাগত জানান গোপালগঞ্জবাসী। 

১৯৭১ সালের ওই দিনের প্রত্যক্ষদর্শী গোপালগঞ্জের প্রবীণ গণমাধ্যমকর্মী ও কবি রবীন্দ্রনাথ অধিকারী (৭১)। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জ শহরে সেদিন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী মানুষের ঢল নামে। তারা স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে শহরের প্রতিটি সড়কে আনন্দ মিছিল বের করেন। এদিন তারা মুক্তির আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠেন। শত কষ্টে অর্জিত বিজয় তারা উদযাপন করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পরিবেশিত হয় দলীয় মুক্তিযুদ্ধের গান। এর পর সাংস্কৃতিককর্মীরা গাইতে থাকেন সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত। এতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শত শত মানুষ কণ্ঠ মেলান। পরে হাতে লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে বের করা হয় মিছিল। সেখানে উচ্চারিত হয় মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্লোগান। সন্ধ্যায় মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনীতিক দল, সামাজিক, শিক্ষক সাংবাদিক নেতাদের নিয়ে প্রজ্বালন করা হয় মোমবাতি। এ সময় সমবেত কণ্ঠে বেজে উঠে ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে। এ জীবন পুণ্য করো দহন-দানে।’

আয়োজনে ছিল না প্রশাসন
৬ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম হানাদারমুক্ত দিবস। এদিন সকালে বিজয়স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভার মাধ্যমে দিবসটি পালন করেছে সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। প্রতি বছর দিবসটি স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে পালিত হলেও এ বছর তা হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসন এবার পরোক্ষভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজকদের অসহযোগিতা করেছে।

১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বিকেল ৪টার দিকে ৩৩৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা কুড়িগ্রাম শহরে প্রবেশ করেন। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন মুক্তিবাহিনীর কেওয়ানএফএফ কোম্পানি কমান্ডার আব্দুল হাই সরকার বীরপ্রতীক। তারা নতুন শহরের ওভারহেড পানির ট্যাংকের ওপরে (বর্তমান সদর থানার উত্তরে অবস্থিত) স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে চারদিকে বিজয়বার্তা ছড়িয়ে দেন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাগত জানাতে রাস্তায় নেমে আসেন হাজারো মুক্তিকামী মানুষ।

গতকাল শনিবার সকালে বিজয়স্তম্ভে ফুলেল শ্রদ্ধা জানায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ১৯ সংগঠন, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক সংগঠন, মহিলা পরিষদ, বাসদ ও কমিউনিস্ট পার্টি। ঐতিহাসিক গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও সরকারি কর্মকর্তা ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতারা ছিলেন অনুপস্থিত।

যদিও পরে আলোচনা সভায় অংশ নেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ রানা, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসমাইল হোসেন ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ বি এম মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ। সভায় অংশ নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই বীরপ্রতীক আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘যখন যে দল ক্ষমতায় ছিল, তাদের লোকজন তখন অনুষ্ঠানে আসছে। এখন কোনো দল ক্ষমতায় নেই, তাই কেউ আসেনি।’

সাংস্কৃতিক কর্মী ইমতে আহসান শিলু বলেন, তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে আগ্রহী। কিন্তু সমাজের প্রভাবশালী অংশের উদাসীনতা নতুন প্রজন্মকে নিরুৎসাহিত করে।

সদরের ইউএনও ইসমাইল হোসেন এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তিনি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, কেন্দ্রীয়ভাবে নির্দেশনা না থাকায় কুড়িগ্রাম হানাদারমুক্ত দিবসে সরাসরি অংশগ্রহণ করা হয়নি। তবে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে।

সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেন বলেন, ‘প্রশাসনের জেলা কমিটির বিভিন্ন মিটিংয়ে আমি সবাইকে দাওয়াত দিয়েছি। প্রশাসন থেকে আমাদের সব রকম সহযোগিতা করেছে। এজন্য আমরা ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু তারা সরাসরি ফুলেল শ্রদ্ধা না জানানোয় আমরা কষ্ট পেয়েছি।’

মেহেরপুরে নানা কর্মসূচি
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণের মুখে ৬ ডিসেম্বর ভোরে মেহেরপুর ছেড়ে পালিয়ে যায় পাকিস্তানি বাহিনী। এ সময় জেলার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস করে। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে আনন্দ উল্লাস করতে করতে রাস্তায় নেমে আসে হাজারো মানুষ। 

এই দিবস পালনে শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরের কলেজ মোড়ে অবস্থিত শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। শুরুতে ফুল দেন জেলা প্রশাসক ড. সৈয়দ এনামুল কবীর। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *