আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হতে তৎপর বাংলাদেশ: ইউনূস

বাংলাদেশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতা জোট আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার প্রচেষ্টা জোরদার করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, বাংলাদেশের জনশক্তি, অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং কৌশলগত অবস্থান আসিয়ানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হতে পারে।

সম্প্রতি মালয়েশিয়া সফরে গিয়ে দেশটির জাতীয় বার্তা সংস্থা বারনামাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ ১৭ কোটিরও বেশি মানুষের একটি বড় বাজার এবং দক্ষ শ্রমশক্তির উৎস। দেশটি আসিয়ান অঞ্চলের শিল্পায়ন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগে অবদান রাখতে প্রস্তুত।

তিনি জানান, মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা ভাগাভাগি করায় গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার মতো খাতে দুই দেশের মধ্যে যৌথ উদ্যোগের সুযোগ রয়েছে। “আমরা এখনো আমাদের সামুদ্রিক সম্পদ যথাযথভাবে কাজে লাগাইনি,” বলেন ইউনূস।

বাংলাদেশ ২০০৭ সাল থেকেই আসিয়ানের ট্রিটি অব অ্যামিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন (TAC)-এর সদস্য। এছাড়া আসিয়ান রিজিওনাল ফোরামের সদস্য এবং ঢাকায় আসিয়ান কমিটিও রয়েছে। তবে সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার জন্য দেশটি এখন সক্রিয়ভাবে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

গত বছরের আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ইউনূস এই উদ্যোগকে নতুন গতি দিয়েছেন। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ও আসিয়ানের বর্তমান চেয়ার আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপন করেন।

তিনি বলেন, “আনোয়ার ইব্রাহিমের আগের ঢাকা সফরের পর থেকেই আমরা আসিয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে নিয়মিত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। এবারও তিনি সহানুভূতিশীল মনোভাব দেখিয়েছেন।”

তবে ইউনূস স্বীকার করেছেন, কিছু সদস্য দেশ আপত্তি তুলতে পারে। “এটি সহজ হবে না, সময় লাগবে। কিন্তু আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাব। আমরা প্রতিবেশী, আমাদের যৌক্তিক অবস্থান আছে,” বলেন তিনি।

বর্তমানে আসিয়ানের ১০টি সদস্য রাষ্ট্র হলো—ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম।

বাংলাদেশ-আসিয়ান বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারিত হচ্ছে। ২০২৩–২৪ অর্থবছরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ৬ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং বৈশ্বিক জিডিপি র‌্যাংকে ৩৫তম অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ এই অঞ্চলে একটি সম্ভাবনাময় অংশীদার হিসেবে গুরুত্ব পাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *