বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশের তালিকায় শীর্ষে থাকে নর্ডিক দেশগুলো। এর মধ্যে অন্যতম সুইডেন। দেশটিতে ১৬৫ বছর আগে থেকেই একটি বিশেষ জীবনধারার চর্চা আছে, যার মাধ্যমে শিশুকে সহজেই ইতিবাচক মনোভাবসম্পন্ন হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। ধারণাটি ‘ফ্রিলুফৎসলিভ’ বা ‘ওপেন এয়ার লাইফ’ নামে বহুল পরিচিত, যার অর্থ প্রকৃতিকে আপন করে নেওয়া ও বাইরের পরিবেশে সময় কাটানো। প্রকৃতির সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলার এই জীবনদর্শন সুইডিশ সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। চলুন জেনে নিই, কীভাবে এই দর্শন আপনার সন্তান পালনে কাজে লাগাতে পারেন।
বাইরে যাওয়ার জন্য সময় নির্ধারণ করুন:
বর্তমানে টেলিভিশন, মুঠোফোনসহ নানা প্রযুক্তির ব্যবহারে শিশুরা প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। যার ফলে তাদের মনোযোগেও দেখা দিচ্ছে ঘাটতি। অথচ মানুষ প্রকৃতিরই অংশ। প্রকৃতির মধ্যে সময় কাটালে শিশুর মানসিক বিকাশ হয় ভালোভাবে। তাই মা-বাবার উচিত প্রতিদিন অন্তত কিছুটা সময় শিশুদের প্রকৃতির মধ্যে কাটানোর সুযোগ করে দেওয়া। নাগরিক জীবনে অসম্ভব মনে হতে পারে, কিন্তু আগেভাগেই সময় নির্ধারণ করলে তা সহজ হয়ে যায়। সুইডিশ সংস্কৃতিতে সকাল বা সন্ধ্যার হাঁটাকে ‘পবিত্র কাজ’ মনে করা হয়। সন্তানকে নিয়ে প্রতিদিন এ সময় হাঁটার অভ্যাস তৈরি করলে প্রকৃতির কাছাকাছি আসার পাশাপাশি মা-বাবার সঙ্গে শিশুর সম্পর্কও দৃঢ় হয়।
যেখানে আছেন, সেখান থেকেই শুরু করুন
প্রকৃতির সঙ্গে শিশুর সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য যে এখনই বনজঙ্গলে গিয়ে ক্যাম্পিং করতে হবে, এমনটা নয়। প্রথমে শিশুকে আশপাশের প্রকৃতি চেনানো দিয়ে শুরু করুন। গাছপালা, পাখি, ফুল, রঙিন পাতা, প্রজাপতি কিংবা কাঠবিড়ালি চেনান। জানালার পাশে দাঁড়িয়ে গাছের পাতার নড়াচড়া দেখা কিংবা বৃষ্টির শব্দ শোনার মধ্যেও প্রকৃতির সঙ্গে এক গভীর সম্পর্ক তৈরি হতে পারে।
আবহাওয়া যেন বাধা না হয়:
ঋতু পরিবর্তনে আবহাওয়াও পরিবর্তন হয়। বর্ষার সময় যেমন বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে। দূষণ বা অন্য কোনো সমস্যা না থাকলে যেকোনো আবহাওয়ায় শিশুকে প্রকৃতির কাছে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। আবহাওয়া ঠান্ডা হলে গরম জামাকাপড় পরিয়ে দিন, হালকা বৃষ্টিতে রেইনকোট বা ছাতা হাতে বাইরে বের হওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। অনেক সময় বৃষ্টিতে ভেজা, কাদা মাড়িয়ে হাঁটার অনুভূতিই হয়ে ওঠে শিশুর শৈশবের সেরা স্মৃতি।