মাথার পাশে ফোন রেখে ঘুমালে বাড়ে মৃত্যুর ঝুঁকি! জানুন কেমন মারাত্মক রোগ হতে পারে

স্মার্টফোন এখন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু অনেকেই অভ্যাস করে ফেলেছেন, ফোনটি বালিশ বা মাথার কাছে রেখে ঘুমিয়ে পড়া। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ‘সর্বক্ষণের সঙ্গী’ ঘুমের সময় মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

ফোন পাশে রাখার ক্ষতিকর প্রভাব

নিদ্রাহীনতা ও ঘুমের ব্যাঘাত

ফোনের স্ক্রিন থেকে নির্গত নীল আলো মস্তিষ্কের পিনিয়াল গ্রন্থিকে প্রভাবিত করে, যা মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদন ব্যাহত করে। ফলস্বরূপ ঘুম আসতে দেরি, বারবার ঘুম ভাঙা এবং গভীর ঘুম না হওয়া – যা দীর্ঘস্থায়ী ইনসমনিয়ার কারণ হতে পারে।

মানসিক উদ্বেগ ও অবসাদ

ফোন পাশে থাকলে মেসেজ, নোটিফিকেশন বা কলের আশঙ্কায় মস্তিষ্ক সম্পূর্ণ বিশ্রামে যায় না। দীর্ঘমেয়াদে এটি উদ্বেগ, খিটখিটে মেজাজ ও অবসাদ সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা এটিকে ‘নোমোফোবিয়া’ বা ফোন থেকে দূরে থাকার ভয়ও বলছেন।

মস্তিষ্কের ক্যানসারের ঝুঁকি

ফোন থেকে নির্গত রেডিওফ্রিকোয়েন্সি ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড (RF-EMF) সম্ভাব্য ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর অধীন আইএআরসি এটিকে ‘গ্রুপ ২বি কারসিনোজেনিক’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। দীর্ঘক্ষণ ফোন মাথার কাছে রাখলে গ্লিওমারসহ ব্রেন টিউমারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

হৃদযন্ত্র ও অন্যান্য শারীরিক জটিলতা

ফোন থেকে নির্গত রেডিয়েশন হৃদস্পন্দন, কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য ও প্রজনন স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

  • ঘুমানোর সময় ফোন অন্তত ৩-৪ ফুট দূরে রাখুন।
  • সম্ভব হলে ফোন অন্য ঘরে রেখে ঘুমান।
  • অ্যালার্মের জন্য ফোনের পরিবর্তে ঘড়ি ব্যবহার করুন।
  • ঘুমানোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে ফোন ব্যবহার বন্ধ করুন।
  • ফোন কাছেই রাখতে হলে এয়ারপ্লেন মোডে রাখুন।

প্রযুক্তি জীবন সহজ করেছে, তবে সচেতন ব্যবহারই সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি। তাই ছোট অসতর্কতাই বড় বিপদ ডেকে আনার আগে সতর্ক হওয়া জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *