গ্যাস্ট্রিক-বদহজমে উপকারী জিরা পানি

জিরা রান্নাঘরের গুরুত্বপূর্ণ মসলা। বেশিরভাগ রান্নাতেই এই মসলার ব্যবহার হয়। এটি শুধু খাবারের স্বাদ-গন্ধ বাড়ায় না, স্বাস্থ্যেরও অনেক উপকার করে। কেননা জিরায় রয়েছে আয়রন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, জিঙ্ক ও পটাশিয়াম। আর এ কারণে রোজ সকালে জিরাপানি পান করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। বিশেষ করে যারা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য এ পানীয় উপকারী। গ্যাস জমে পেট ফুলে শক্ত হয়ে যাওয়া, পেট ভার হয়ে থাকা, পেটে অস্বস্তি কিংবা পেট ব্যথাও সারাতে পারে জিরা পানি। শুধু তাই নয়, জিরা বদহজমের সমস্যাও দূর করতে পারে।

জিরা পানির অন্যান্য স্বাস্থ্য উপকারিতা

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে জিরা পানি। কেননা জিরা পটাশিয়াম, আয়রন ও ফাইবারের ভালো উৎস। নিয়মিত জিরা পানি পান করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ঘনঘন অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাও কমে। 

জিরা পানি শরীর থেকে টক্সিন বের করতে পারে। পরিপাকক্রিয়া ঠিক থাকলে, শরীর থেকে টক্সিন সহজেই পরিষ্কার হয়, ফলে ওজন হ্রাস এবং ফ্যাট কমে। তাই নিয়মিত জিরা পানে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।

খালি পেটে জিরা পানি পান ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য উপকারী। জিরা শরীরের ইনসুলিন উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম থাকায় জিরা পানি শরীরের সঠিক কর্মকাণ্ড বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া, এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

জিরা পানি লিভারের জন্যও উপকারী। এতে লিভারের ডিটক্সিফিকেশন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি ডাইজেস্টিভ এনজাইমের উৎপাদন বাড়ায়। 

জিরা পানিতে অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাস করতে অত্যন্ত কার্যকরী। শুধু তাই নয়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি, ট্রাইগ্লিসারাইড এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও অত্যন্ত উপকারী জিরা পানি। নিয়মিত জিরা পানি পানে হৃদরোগজনিত নানা জটিলতা হ্রাস পায়।

জিরা পানিতে থাকা উপকারী উপাদানগুলো ত্বক উজ্জ্বল করে। এছাড়াও, জিরা পানি ব্রণের সমস্যা দূর করে এবং সংক্রমণ থেকে ত্বককে রক্ষা করে। এ পানি চুলের গোড়া শক্তিশালী করে তোলার পাশাপাশি, চুল পড়া প্রতিরোধ, খুশকি দূর এবং অকালে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা দূর করতেও অত্যন্ত সহায়ক। 

যেভাবে জিরা পানি তৈরি করবেন 
প্রথমে ১ চামচ জিরা পাত্রে সামান্য গরম করে নিন। এবার এ জিরা ভালো করে ধুয়ে নিন। এক কাপ কুসুম গরম পানিতে জিরা ঢেলে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন পানির রং হলদে ভাব আসা পর্যন্ত। পানিতে হলদে ভাব এলে পানি ছেকে নিন। খালি পেটে সকালে নিয়মিত এ পানীয় পান করলে এক সপ্তাহের মধ্যেই উপকার পাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *