খিঁচুনি কেন হয়, কী করবেন সেই সময়?

খিঁচুনি হলো মাংসপেশির নিয়ন্ত্রণহীন সংকোচন, যা কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। তবে পাঁচ মিনিটের বেশি খিঁচুনি হলে হাসপাতালে নিতে হবে। সব খিঁচুনিতেই মাংসপেশির এমন সংকোচন হয় না। কোনো কোনো মানসিক বিপর্যয়ে খিঁচুনির মতো লক্ষণ দেখা যেতে পারে। একে সাইকোজেনিক নন-এপিলেপটিক কলভালসন বলে।জ্বরের সময় কারও কারও খিঁচুনি হয়। ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত এই প্রবণতা থাকলেও পরে এটা এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। তবে কিছু জ্বর বা সংক্রমণ আছে, যার সঙ্গে খিঁচুনি হওয়াটা স্বাভাবিক। যেমন মেনিনজাইটিস, এনকেফালাইটিস ইত্যাদি। আজকাল তাল বা খেজুরের রস খেয়েও কারও কারও খিঁচুনি হচ্ছে।

বুঝবেন যেভাবে:

অনেকে আবার কাঁপুনির সঙ্গে খিঁচুনিকে গুলিয়ে ফেলেন। জ্বরের সঙ্গে কাঁপুনি থাকলে অনেকে খিঁচুনি বলে ভুল করেন। তাই সেই সময়টা চিকিৎসকে দেখাতে পারলে ভালো হয়। সম্ভব হলে ভিডিও করে রাখতে পারেন।অনেক ধরনের খিঁচুনি আছে। সারা শরীরে বা শুধু শরীরের একপাশেও হতে পারে। সাধারণত খিঁচুনি হলে জিবে কামড় পড়তে দেখা যায়। খিঁচুনির সময় অনেকের প্রস্রাব-পায়খানাও হয়ে যায়। জন্মগত বা জেনেটিক কারণে খিঁচুনি হতে পারে। এ ধরনটিকে বলে প্রাইমারি এপিলেপসি। মস্তিষ্কে কোনো টিউমার বা জন্মগত কোনো রক্তনালির এনিউরিসম থাকলে তার লক্ষণ হিসেবে খিঁচুনি হয়ে থাকে।

কী করবেন:

*কারও খিঁচুনি হলে ঘাবড়ে না গিয়ে রোগীকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে আসুন। রোগী যদি আগুন, পানি বা কোনো মেশিনের কাছে থাকেন, তাহলে সেখান থেকে সরিয়ে ফেলুন।

*গলায় টাই বা নেকলেস পরা থাকলে খুলে ফেলুন।

*রোগীকে বাঁ কাতে শুইয়ে দিন।

*মুখে কিছু জমে থাকলে পরিষ্কার করে দিন।

*এই কাজগুলো করার পাশাপাশি চিকিৎসক ডাকুন বা হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন। রোগীর রক্তে গ্লুকোজ কমে গিয়ে এমন হতে পারে, তাই ডায়াবেটিক রোগী হলে মুখে কিছু খাওয়াতে যাবেন না। গ্লুকোজ স্যালাইনের মাধ্যমে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার চিকিৎসা করতে হবে।

মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে বা রক্তক্ষরণ হয়ে স্ট্রোক হলো কি না তা নির্ণয়ের জন্য ব্রেন সিটি স্ক্যান বা এমআরআই করতে হবে। ক্ষেত্রবিশেষ সেরিব্রাল অ্যানজিওগ্রাফিও করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *