হাটহাজারী মাদ্রাসা ও সুন্নিপন্থিদের সংঘর্ষে ১৭৫ আহত, প্রশাসনিক ব্যর্থতার অভিযোগ

চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসা (আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম) শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয় সুন্নিপন্থিদের সংঘর্ষে ১৭৫ জন আহত হওয়ার ঘটনায় প্রশাসনিক ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।

এ ঘটনায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে বলছেন, রাত ৮টায় সংঘর্ষ শুরু হলেও আনুমানিক রাত ১টার দিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও, উপজেলা প্রশাসন প্রথমে কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি।

এছাড়া, সুন্নিপন্থিরা বিভিন্ন বাহনে করে জশনে জুলুসে যাওয়ার পথে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বারবার প্রশাসনের কাছে উসকানি বন্ধের জন্য অনুরোধ করলেও, দুপুরের পর পুলিশ মোতায়েন করেও তাদের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) মাদ্রাসা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে কথা বলেন। মাদ্রাসার মুফতি ও মুহাদ্দিস আল্লামা জসিম উদ্দীন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘‘এই হামলা ও উসকানি পুরোপুরি পরিকল্পিত।’’

লিখিত বক্তব্যে মাদ্রাসার মহাপরিচালক মুফতি খলিল আহমেদ কাসেমীর পক্ষে মাওলানা মুনির আহমদ বলেন, ‘‘শনিবার সকালে সুন্নি নামধারী বিদআতপন্থিরা মাদ্রাসার সামনে এসে উসকানিমূলক স্লোগান, গান-বাজনা এবং অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি দেখিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের উত্তেজিত করে তোলে।’’

তিনি আরও জানান, ‘‘মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আগেই ঘোষণা করেছিল যে, শনিবার ফজরের পর মাদ্রাসার গেট বন্ধ থাকবে এবং শিক্ষার্থীদের বাইরে যেতে দেওয়া হবে না।’’ তবে, সুন্নিপন্থিরা মাদ্রাসার সামনে এসে অশালীন আচরণ শুরু করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

এ সময়, তারা মাদ্রাসার ছাত্রদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে, ফলে বেশ কয়েকজন ছাত্র আহত হন। পরে, ওই দিন রাতে ছাত্ররা হাটহাজারী বাজারে বাজার করতে গেলে, সুন্নিপন্থিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে দেড় শতাধিক ছাত্রকে আহত করে। দোকানপাটে ভাঙচুর ও লুটপাটও চলে।

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ দাবি করে, ‘‘বর্তমানে হাটহাজারী মাদ্রাসার অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে, তবে ৩০-৩৫ ছাত্র গুরুতর আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।’’

সংবাদ সম্মেলনে তারা আরও বলেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে অশান্ত করতে উসকানি, মসজিদ অবমাননা, নিরীহ মাদ্রাসা ছাত্রদের ওপর হামলা এবং দোকানপাটে ভাঙচুরের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’’ এছাড়া, ফেসবুকসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় উসকানিমূলক পোস্ট দেওয়াদের গ্রেফতার দাবি করেন তারা।

এ সময় হাটহাজারী মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন, যারা ঘটনাটি তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *