সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব সাত দিনের মধ্যে বুঝিয়ে দিতে সময় বেঁধে দিয়েছেন বিএনপি নেতা তাজকিন আহমেদ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে দুই শতাধিক কর্মী নিয়ে সাতক্ষীরা পৌরসভায় হাজির হয়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহমেদের কাছে হাইকোর্টের আদেশের কপি দিয়ে তিনি এ সময়সীমা বেঁধে দেন।
তাজকিন আহমেদ সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি বলেন, তিনি সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর ২০২৩ সালের ২৩ নভেম্বর বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে এবং একটি পক্ষের স্বার্থ হাসিল করার জন্য মেয়র পদ শূন্য ঘোষণা করে। পরে উপনির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এর বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে রিট করলে আদালত স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। এরই মধ্যে গত বছরের ৫ আগস্টের পরে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার সব পৌরসভার মেয়রদের পদ এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে শূন্য ঘোষণা করে। কিন্তু ওই সময় সুপ্রিম কোর্টের স্থিতাবস্থা বহাল থাকায় সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র পদের বিষয়টি সম্পূর্ণ আদালতের ওপর নির্ভরশীল ছিল। এরপর দীর্ঘ শুনানির পর চলতি বছর ১২ জানুয়ারি বিচারপতি মোহাম্মদ মোস্তফা জামান ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের দ্বৈত বেঞ্চ রিট নিষ্পত্তি করার পাশাপাশি ‘নো কনফিডেন্স অনাস্থা)-এর সব প্রক্রিয়াকে অবৈধ ঘোষণা করেন। এর ফলে মেয়র পদে তাঁর আর দায়িত্বপালনে কোনো বাধা নেই বলে তাজকিন আহমেদ দাবি করেন।
তাজকিন আহমেদ নিজেকে আইনগতভাবে এখনো মেয়র দাবি করে বলেন, ইতিমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার সাতক্ষীরা পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগ করেছে। কিন্তু এই পৌরসভার মেয়রের বিষয়টি ‘সাবজুডিস ম্যাটার’ (বিচারাধীন বিষয়) ছিল, এ জন্য সরকারের প্রশাসনিক আদেশটি সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়রের জন্য কার্যকর নয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসনিক আদেশের প্রতি সম্মান দেখিয়ে তিনি চলতি বছরের ৭ মে মেয়রের কার্য পরিচালনা করার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে নোটিশ পাঠিয়েছিলেন। তার কপি সাতক্ষীরা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকেও দিয়েছিলেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আগামী সাত দিনের মধ্যে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিলে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি নেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
এ বিষয় জানতে চাইলে সাতক্ষীরা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাজকিন আহমেদ আদালতের আদেশের কপি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছেন। তার একটি কপি আমাকেও দেওয়া হয়েছে। আমি অবহিত হওয়ার পর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’