বিশ্বজুড়ে পোলিও নির্মূল অভিযান বড় ধরনের সংকটে পড়তে যাচ্ছে। আগামী বছর থেকেই কর্মসূচিটির বাজেট প্রায় ৩০ শতাংশ হ্রাস পেতে চলেছে, আর ২০২৯ সালের মধ্যে দেখা দিতে পারে ১.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ১০০ কোটি ৭০ লাখ ডলার) ঘাটতি— এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বিষয়টি আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
ডব্লিউএইচও, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনসহ একাধিক সংস্থা মিলে পরিচালনা করছে এই কর্মসূচি, যা গ্লোবাল পোলিও ইরাডিকেশন ইনিশিয়েটিভ (জিপিইআই) নামে পরিচিত। সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তহবিল সংকট অব্যাহত থাকলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম স্থগিত বা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
অর্থ ঘাটতির পেছনে মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের অনুদান হ্রাস। বিশেষ করে, ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় অর্থায়ন উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়েছে, যা পুরো কর্মসূচির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলেছে।
ডব্লিউএইচও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন,
“যদি প্রতিটি দেশ তাদের অঙ্গীকার রক্ষা করে এবং কোনো শিশুই টিকার বাইরে না থাকে, তবে পোলিও নির্মূল এখনো সম্ভব।”
বর্তমান পরিস্থিতিতে সংস্থাটি বলছে, তারা এখন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে নজরদারি ও টিকাদান কার্যক্রমে অগ্রাধিকার দেবে। পাশাপাশি, হামসহ অন্যান্য টিকা কার্যক্রমের সঙ্গে সমন্বয় করে তারা নতুনভাবে ‘ফ্র্যাকশনাল ডোজিং’ কৌশল প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই কৌশলের মাধ্যমে একটি টিকার মাত্র পাঁচ ভাগের এক ভাগ ডোজ ব্যবহার করেও শিশুদের সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব, যা সীমিত সম্পদের মধ্যেও কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার একটি কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সময়মতো প্রয়োজনীয় অর্থায়ন না পেলে দীর্ঘদিনের অর্জনগুলোও ঝুঁকির মুখে পড়বে, এবং পোলিওর মতো প্রায় নির্মূল হওয়া রোগ ফের হুমকি হয়ে উঠতে পারে।