টানা প্রবল বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে শ্রীলঙ্কায় এ সপ্তাহে কমপক্ষে ৫৬ জন নিহত হয়েছেন এবং ২১ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এটি সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে দেশটির অন্যতম ভয়াবহ আবহাওয়াজনিত দুর্যোগ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমসি) জানিয়েছে, মধ্যাঞ্চলের চা-বাগান এলাকা বাদুলায় পাহাড়ধসে বাড়ির ওপর মাটি ধসে পড়ে ২১ জন নিহত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, প্লাবিত শহর দিয়ে বয়ে যাওয়া পানির স্রোতে বাড়িঘর ভেসে যাচ্ছে।
সারা দেশে বেশিরভাগ ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। পূর্ব উপকূল ঘেঁষে এগিয়ে আসা সাইক্লোন ‘দিতওয়া’র কারণে শুক্রবার আরও বিরূপ আবহাওয়া দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভারতের উপকূলে আঘাত হানতে পারে এমন এই সাইক্লোনের কারণে শ্রীলঙ্কার নদীগুলোতে পানি দ্রুত বাড়ছে। নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেলানি নদী উপত্যকার নিচু এলাকাগুলোর জন্য ৪৮ ঘণ্টার ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে, যার মধ্যে রাজধানী কলম্বোও রয়েছে।
শুক্রবার দ্বীপটির মধ্য ও উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকায় ২০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। প্রদেশগুলোর সঙ্গে সংযোগ রক্ষাকারী প্রধান সড়কগুলো বন্ধ করা হয়েছে। জরুরি কয়েকটি ছাড়া সব ট্রেনসেবা বাতিল করেছে রেলওয়ে বিভাগ।
ডিএমসি জানায়, এ পর্যন্ত প্রায় ৪৪ হাজার মানুষ চরম আবহাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। উদ্ধার তৎপরতায় ২০ হাজারের বেশি সেনা সদস্য মাঠে নেমেছেন। পাশাপাশি এ-লেভেল পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ধরনের চরম আবহাওয়া শ্রীলঙ্কায় বিরল। চলতি শতাব্দীতে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল ২০০৩ সালের জুনে, যখন ২৫৪ জন নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।