মাদাগাস্কারের তরুণরা ‘জেন-জি’ আন্দোলনে সরকারের পতন ঘটানোর পরও তাদের বিক্ষোভ থামাচ্ছে না। এখন তারা দেশটির প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা এবং সদ্য বরখাস্ত হওয়া প্রধানমন্ত্রীকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া, রাজধানী আন্তানানারিভোর প্রশাসককেও অপসারণের দাবি জানিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
গত সোমবার রাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে, রাজোয়েলিনা সরকারের পতনকে মেনে নিয়ে তরুণদের সঙ্গে সংলাপের জন্য ‘পরিসর তৈরির’ প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, “পানির সংকট এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাট মোকাবেলায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং লুটপাটে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তা করা হবে।”
তবে আন্দোলনকারীরা প্রেসিডেন্টের বক্তব্যে হতাশা প্রকাশ করে জানিয়েছে, তারা প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে প্রকাশ্য ক্ষমাপ্রার্থনা চায়। একই সঙ্গে, প্রশাসককে অপসারণের দাবি জানিয়েছে তারা।
এ দাবিতে মঙ্গলবারও তরুণরা বিক্ষোভ করতে থাকে। রাস্তায় নেমে আসা বিক্ষোভকারীরা প্ল্যাকার্ডে লিখেছে, “আমাদের পানি চাই, আমাদের বিদ্যুৎ চাই, রাজোয়েলিনা পদত্যাগ করো।”
মাদাগাস্কারের রাজধানী আন্তানানারিভো এবং দেশটির অন্যান্য শহরগুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীরা মিছিল করতে দেখা যায়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজধানী থেকে ৫১০ কিলোমিটার দূরের মাহাজাঙ্গা এবং ৯৫০ কিলোমিটার দূরের দিয়েগো সুয়ারেজেও বিক্ষোভ ছড়িয়েছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলনে অন্তত ২২ জন নিহত ও ১০০ এরও বেশি আহত হয়েছেন। তবে মাদাগাস্কারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তথ্য অস্বীকার করে বলেছে, জাতিসংঘের তথ্য গুজব এবং ভ্রান্তির ওপর ভিত্তি করে তৈরি।
কেনিয়া এবং নেপালের ‘জেন-জি’ আন্দোলন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মাদাগাস্কারের তরুণরা এই বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে। এটি ২০২৩ সালের নির্বাচনে পুনর্নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজোয়েলিনা ২০০৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রথম ক্ষমতায় আসেন এবং ২০১৮ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করে আবারও প্রেসিডেন্ট হন। গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি তৃতীয় মেয়াদে জয় পান, যদিও তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা ভোটে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন।