বিজেপি থেকেই রাজধানী দিল্লির নাম পরিবর্তনের দাবি উঠেছে। দলের সংসদ প্রবীণ খন্ডেলওয়াল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে চিঠি দিয়ে দিল্লির নাম পাল্টে ‘ইন্দ্রপ্রস্থ’ করার প্রস্তাব করেছেন।
বিজেপির এই লোকসভা সাংসদ ২০২৪ সালে চাঁদনি চক থেকে নির্বাচিত হন এবং ২০১৭ সালে জিএসটি কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দিল্লির নাম পরিবর্তনের এই দাবি তুলে আসছিলেন, যা এবার আনুষ্ঠানিকভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করলেন। তাঁর যুক্তি, ‘শিকড়ের’ প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই দিল্লির নাম হওয়া উচিত ‘ইন্দ্রপ্রস্থ’। শুধু নাম পরিবর্তনই নয়, দিল্লিতে মহাভারতের পঞ্চপাণ্ডবের একটি বিশাল মূর্তি স্থাপনেরও আবেদন করেছেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ছাড়াও, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্ত এবং অন্যান্য মন্ত্রীদেরও একই দাবি সংবলিত চিঠি পাঠিয়েছেন প্রবীণ খন্ডেলওয়াল। তাঁর বক্তব্য, এই পরিবর্তন দিল্লির ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও সভ্যতাগত শিকড়কে প্রতিফলিত করবে।
তাঁর চিঠিতে উল্লেখ আছে, ‘দিল্লির ইতিহাস মাত্র কয়েক হাজার বছরের নয়। ভারতীয় সভ্যতার আত্মা ইন্দ্রপ্রস্থের উজ্জ্বল সংস্কৃতি এতে নিহিত, যা পাণ্ডবরা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ইন্দ্রপ্রস্থের পবিত্র ভূমিতে পাণ্ডবদের মূর্তি স্থাপন করলে ভারতের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও বিশ্বাসের পুনর্জাগরণ ঘটবে। নতুন প্রজন্ম পাণ্ডবদের মূল্যবোধ, ন্যায়পরায়ণতা ও সাহসিকতার প্রতীকের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবে।’
প্রবীণ খন্ডেলওয়ালের যুক্তি, দিল্লি কেবল একটি আধুনিক মহানগর নয়, এটি ভারতীয় সভ্যতার আত্মা। তাই প্রয়াগরাজ, অযোধ্যা, উজ্জয়ন ও বারাণসীর মতো দিল্লিকেও তার প্রাচীন শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। দেশকে তার ‘আসল অবস্থা’র জন্য সম্মান জানাতেই এই উদ্যোগ। তাঁর মতে, নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে শুধু ঐতিহাসিক ন্যায়ই প্রতিষ্ঠিত হবে না, একই সঙ্গে সাংস্কৃতিক নবজাগরণের সূচনা ঘটবে।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাংস্কৃতিক নবজাগরণের দৃষ্টিভঙ্গির আওতায় অযোধ্যা, কাশী ও প্রয়াগরাজের মতো প্রাচীন শহরের পুনরুত্থান ঘটেছে। তাহলে দিল্লির ক্ষেত্রে কেন হবে না?’
দিল্লির নাম পরিবর্তনের পক্ষে তাঁর প্রধান যুক্তি হলো, এর মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বার্তা দেওয়া যাবে যে ভারতের রাজধানী ক্ষমতার কেন্দ্রই নয়, বরং এটি ধর্ম, মূল্যবোধ ও জাতীয়তাবাদেরও প্রতীক।