জাপানের যুবরাজ হিসাহিতো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাপ্তবয়স্ক হলেন

জাপানের যুবরাজ হিসাহিতো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাপ্তবয়স্কে পা রেখেছেন। ১৯ বছর বয়সি হিসাহিতো সম্রাট নারুহিতোর ভাতিজা এবং জাপানের ক্রিস্যানথিমাম সিংহাসনের উত্তরাধিকার তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন। তিনি হলেন রাজপরিবারের প্রথম পুরুষ সদস্য, যিনি গত চার দশকে প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে ঘোষণা পেলেন।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) তার প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় রাজপরিবারের বাসভবনে, যেখানে সম্রাটের দূতের কাছ থেকে ঐতিহ্যবাহী ‘কানমুরি’ মুকুট গ্রহণ করেন। এ সময় যুবরাজ হিসাহিতো তার বক্তব্যে বলেন, “আজকের এই প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার অনুষ্ঠানে মুকুট দেওয়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। একজন প্রাপ্তবয়স্ক রাজপরিবারের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থেকে আমি আমার কর্তব্য পালন করব।”

এরপর, যুবরাজ ইম্পেরিয়াল প্রাসাদে ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরেন এবং ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে প্রাসাদের তিনটি পূজাস্থলে যান। পাশাপাশি, তিনি ইসে মন্দির, জাপানের প্রথম সম্রাট জিম্মুর সমাধি এবং তার প্রপিতামহ সম্রাট শোওয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

১৯৮৫ সালে যুবরাজ হিসাহিতোর বাবা ক্রাউন প্রিন্স আকিশিনোর পর এটিই কোনো জাপানি যুবরাজের প্রথম প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার অনুষ্ঠান।

সম্রাটের উত্তরাধিকার নিয়ে বিতর্ক
যদিও যুবরাজ হিসাহিতো এখন সিংহাসনের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন, তবে সিংহাসনের উত্তরাধিকার নিয়ে বিতর্ক থামেনি। ১৯৪৭ সালের ইম্পেরিয়াল হাউস আইন অনুসারে, কেবল পুরুষরা সিংহাসনে বসতে পারেন, যার কারণে বর্তমানে সম্রাট নারুহিতোর একমাত্র কন্যা প্রিন্সেস আইকো সিংহাসনের উত্তরাধিকার তালিকায় নেই।

এ ছাড়া, যুবরাজ হিসাহিতোর পরিবারে একমাত্র দুই বড় বোন আছেন—প্রিন্সেস কাকো এবং প্রাক্তন প্রিন্সেস মাকো, যিনি সাধারণ নাগরিককে বিয়ে করার পর রাজপরিবারের মর্যাদা হারিয়েছেন।

এদিকে, জাপানের রাজতন্ত্রে নারী উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আইনি সংস্কারের দাবি উঠছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, “পুরুষ না নারী উত্তরাধিকার, সেটি মূল প্রশ্ন নয়, বরং প্রশ্ন হল কীভাবে রাজতন্ত্রকে রক্ষা করা যায়।”

বিজ্ঞান ও প্রকৃতিতে আগ্রহী যুবরাজ
প্রাথমিক শিক্ষার পর, যুবরাজ হিসাহিতো বর্তমানে সুকুবা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশেষভাবে পোকামাকড়, বিশেষত ফড়িং নিয়ে গবেষণায় আগ্রহী। ইতোমধ্যে, টোকিওর আকাসাকা প্রাসাদে পোকামাকড় নিয়ে একটি গবেষণাপত্রে সহলেখক হিসেবে তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

এছাড়া, যুবরাজ জানিয়েছেন যে, তিনি নগর এলাকায় পোকামাকড়ের প্রজাতি রক্ষায় কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *